আজ রবিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচার বিভাগ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগে একমত বিএনপি-জামায়াত: আপত্তি এনসিপিসহ অন্যদের

editor
প্রকাশিত জুলাই ২২, ২০২৫, ০২:০১ অপরাহ্ণ
বিচার বিভাগ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগে একমত বিএনপি-জামায়াত: আপত্তি এনসিপিসহ অন্যদের

Oplus_16908288

Sharing is caring!

সিনিয়র প্রতিবেদকঃ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে বাছাই কমিটি ব্যর্থ হলে বিচার বিভাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়ে একমত বিএনপি ও জামায়াত। তবে এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলনসহ কিছু দল এর বিরোধিতা করেছে।
ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও নতুন জট তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ১৭তম দিনের আলোচনায় এমন জট তৈরি হয়।
সংলাপে জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে বাছাই কমিটির মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করে কমিশন। কমিটির বিষয়ে দলগুলো একমতও ছিল। আজকের আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে সংশোধিত প্রস্তাব দেওয়া হয়।
প্রস্তাব দেওয়ার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, কমিটির মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ না করে গেলে সংবিধানের ১৩তম সংশোধনীর বিধান বলবৎ হবে। তবে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে বাদ রাখা হবে।
 অর্থাৎ কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে পারবেন না। ১৩তম সংশোধনীতে বিচার বিভাগ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের কথা বলা আছে। এই ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াত একমত।
তবে বিএনপি-জামায়াতের অবস্থানের বিপরীতে সংলাপের মধ্যাহ্ন বিরতিতে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন ও কারা এই সরকারে প্রধান হবেন—সেই ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একমত হয়ে যাওয়ার কারণে অন্যান্য দলের নতুন প্রস্তাব চাপা পড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত কিছু দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে একটা প্রস্তাব এসেছিল—বিচার বিভাগ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান না আনা। এখানে যুক্তি ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচার বিভাগ থেকে রাখা হলে বিচার বিভাগের দলীয়করণের ঘটনা ঘটতে পারে।
 আরেকটি বিষয় হচ্ছে, তত্ত্বাবধায়কে (প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে) রাষ্ট্রপতিকে রাখা হলে কী হয়, সেটা আমরা অতীতে দেখেছি, ১/১১ সরকারের আবির্ভাব ঘটেছে। ফলে বিগত দিনে এখানে একটা ঐকমত্যের জায়গা এসেছিল। বিএনপি বিচার বিভাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টা না রাখার বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেছিল এবং জামায়াত রাষ্ট্রপতিকে না রাখার কথা বলেছিল।’
রুবেল আরও বলেন, ‘এরপর আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যখন নতুন প্রস্তাব এল, তখন আমরা দেখলাম—বিএনপি একটা নতুন প্রস্তাব এনেছে। সেখানে বিচার বিভাগকে রাখার বিষয়ে সংবিধানের যে ত্রয়োদশ সংশোধনী ছিল, সেটাতে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত একমত হয়ে গেছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে গঠিত হবে, কারা প্রধান উপদেষ্টা হতে পারবেন— এই বিষয়ে বিএনপি-জামায়াত একমত হয়েছে উল্লেখ করে গণসংহতির এই নেতা বলেন, ‘ফলে, আমরা যারা নতুন ব্যবস্থা চাচ্ছি, তাদের প্রস্তাবগুলো চাপা পড়ে যাচ্ছে।’
আবুল হাসান রুবেল জানান, কমিশনের প্রস্তাব ছিল—প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান এক ব্যক্তি হতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা একজন হতে পারবেন। তাই এখানে যাঁদের ভিন্নমত আছে, তাঁরা সেই ভিন্নমত রেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।