আজ সোমবার, ১৮ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেধড়ক পেটানোর পর দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রকে ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যা দিলেন প্রধান শিক্ষক

editor
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ
বেধড়ক পেটানোর পর দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রকে ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যা দিলেন প্রধান শিক্ষক

Oplus_16908288

Sharing is caring!

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) সংবাদদাতাঃ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র তাছিন তালহাকে (৭) বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের দায় এড়াতে ওই শিশু শিক্ষার্থীকে উল্টো ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যা দিয়ে অভিভাবককে গালাগাল করেছেন প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় বাসিন্দা ও এলাকাবাসী এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা তাসলিমা আক্তার শাপলা অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) তালহা স্কুলে গিয়ে অন্যান্য সহপাঠীদের সঙ্গে “আমাদের ছোট নদী” ছড়া লেখার কাজ করছিল।
কিছু বর্ণ ছোট-বড় হয়ে গেলে শিক্ষক নজরুল ইসলাম তাকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে পেটান। এতে তালহার পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। পরে সমাবেশে লাইন বাঁকা হওয়ায় আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গেও একই আচরণ করেন তিনি।
ঘটনার পর শিশুটি বাড়ি ফিরে কান্নাকাটি করে মাকে বিষয়টি জানালে, মা স্কুলে গিয়ে শিক্ষকের কাছে ব্যাখ্যা চান। অভিযোগ রয়েছে, তখন প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জনসমক্ষে বলেন, ‘আপনার ছেলে এক মাস আগে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়েছে।’
 এরপর শিক্ষক তাসলিমা আক্তার ও তার ছেলেকে ‘চাঁদাবাজ’ বলেও গালিগালাজ করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় গত রোববার (১৭ আগস্ট) ২৫ জন অভিভাবকের স্বাক্ষরযুক্ত লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই শিশুদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। সামান্য ভুলেও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এসব কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহাগ হোসেন বলেন, এই প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণ নতুন কিছু নয়। তিনি প্রধান শিক্ষক হওয়ায় সবসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। সামান্য ভুলেও বাচ্চাদের পেটান। তার এই আচরণে স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। দ্বিতীয় শ্রেণির শিশু চাঁদা চাইবে এটা অবিশ্বাস্য।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাস খানেক আগে ওই ছাত্র আমার কাছে এসে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দাবি করেছিল। সেদিন ক্লাসে হট্টোগোল করায় ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করতে মেরেছি। এটা আমার ঠিক হয়নি। প্রশংসাপত্র কম্পিউটার থেকে তৈরী করতে খরচ হয়। তাই অল্প পরিমানে আদায় করি। তবে সবার কাছে নয়।’
আক্কেলপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি জেনেছি, শিশুর অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম জানান, শিশুকে মারধরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।