Sharing is caring!

আকরাম হোসেন হিরন, কাপাসিয়া প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ‘পথের সাথী’ পরিবহনে আধিপত্য বিস্তারকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, প্রতারক ও কোম্পানির টাকা আত্মসাতকারী আব্দুস সামাদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মালিক-শ্রমিকরা মানববন্ধন কর্মসূচি ও প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা সদর বাসটার্মিনাল সংলগ্ন ‘ফকির মজনু শাহ্ সেতু’র পশ্চিম প্রান্তে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের আসামী ও শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে পথের সাথী পরিবহনের মালিক-শ্রমিকরা আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে ঘন্টাব্যাপী নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।
এ সময় তারা গত ফেসিস্ট সরকারের আমলে ‘পথের সাথী’ পরিবহনের একজন কাউন্টার মাস্টার আব্দুস সামাদের দুর্নীতি ও লুটপাটের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। গত ১৪ বছর ধরে তার কাছে মালিকদের পাওনা টাকা চাওয়ার বিষয়টিকে চাঁদা দাবি বলে প্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা। সম্প্রতি তার কাছে পাওনা টাকা চাইলে উল্টো পথের সাথী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জুনায়েদ হোসেন লিয়নের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগ করেন। ইতিমধ্যে তার মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ‘পথের সাথী’ পরিবহনের মালিক ও নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে কোম্পানির পরিচালক মোঃ শামসুল হক বক্তব্যে বলেন, গাজীপুর সদর থেকে কাপাসিয়ার টোক পর্যন্ত যাত্রী পরিবহনের জন্য ২০১১ সালে জয়েনস্টক অব কোম্পানি থেকে তারা ‘পথের সাথী’ পরিবহনের অনুমোদন নিয়ে জুনায়েদ হোসেন লিয়নকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব প্রদান করেন। যথারীতি তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরে তিনি উপজেলা ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেলে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ২৯ টি মামলা দিয়ে তার কাছ থেকে ‘পথের সাথী’ পরিবহনের দায়িত্ব আব্দুস সামাদ ছিনিয়ে নেয়। ওই সময় আব্দুস সামাদ ‘পথের সাথী’ পরিবহনের মালিকদের সাথে নির্দিষ্ট হারে ভাড়া পরিশোধের চুক্তি করেন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় আব্দুস সামাদ মালিকদের কোন ভাড়া পরিশোধ করে নি। গত ১৪ বছরে বাস মালিকগণ ভাড়া বাবদ প্রায় ৪০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছেন। বর্তমানে সব বাস মালিকগণ জুনায়েদ হোসেন লিয়নের নেতৃত্বে সামাদের কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় তা না দেওয়ার অজুহাতে চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগ করেন।
পথের সাথী পরিবহনের পরিচালক জামাল সরকার বলেন, একজন স্বল্প বেতনের কাউন্টার মাস্টার কীভাবে ৫টি বাসের মালিক হতে পারেন তা কোনোভাবেই বোধগম্য নয়। আব্দুস সামাদ একজন বড় মাপের ভাটপার। গত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে রাজদূত পরিবহন ও পথের সাথী পরিবহনের মালিকদের জিম্মি করে তিনি কোটি টাকারও বেশি লুটপাট করে বাস মালিকদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। বরং নতুন করে চাঁদা দাবির মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন। বর্তমানে তার লোকজন পরিকল্পিত ভাবে প্রকাশ্যে যাত্রীবাহী বাসে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করছে। তার বিরুদ্ধে বাস মালিক ও নেতৃবৃন্দ আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি। বর্তমানে কাপাসিয়ার টোক থেকে জয়দেবপুরের শিববাড়ি পর্যন্ত ৫৫ টি বাস প্রতিনিয়ত যাত্রীসেবা দিচ্ছে বলে জানান তারা।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন পথের সাথী পরিবহনের পরিচালক জুয়েল চৌধুরী, মিলন প্রধান, মাসুদ চৌধুরী, সারফুদ্দিন সবুজ, আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
পরে তারা এব্যাপারে প্রতিকার ও আব্দুস সামাদের গ্রেফতার দাবি করে উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করার ঘোষণা দেন।