আজ সোমবার, ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানকে অশালীন কটুক্তি করা ভাইরাল ফারিয়াসহ ৩ জন সমন্বয়ক চাঁদাবাজি করায় কারাগারে

editor
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানকে অশালীন কটুক্তি করা ভাইরাল ফারিয়াসহ ৩ জন সমন্বয়ক চাঁদাবাজি করায় কারাগারে

Oplus_16908288

Sharing is caring!

Manual6 Ad Code
সদরুল আইন:
রাজধানীর উত্তরায় সমন্বয়ক পরিচয়ে ব্যবসায়ীর বাসায় ঢুকে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে সেই ফারিয়া আক্তার তমাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ফারিয়া গত ২৫ আগস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের ঢাকার সেগুনবাগিচার বাড়ির নিচে বিক্ষোভে স্লোগান দিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফজলুর রহমানের প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলীয় সব ধরনের পদ সম্প্রতি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে দলটি।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানোর কিছুদিন যেতে না যেতেই ফারিয়া নিজেই চাঁদাবাজির অভিযোগে আরও দুজনের সঙ্গে গ্রেপ্তার হলেন।
পুলিশ জানায়, ফারিয়া ছাড়াও গ্রেপ্তারকৃত আরও দুজন হলেন এ এইচ এম নোমান রেজা ও তানজিল হোসেন। মামলা থেকে অব্যাহতি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফারিয়াসহ আরও দুজন সর্বশেষ এই চাঁদাবাজি করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত সবার বিরুদ্ধে আরো চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ যাচাই করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেয়ে তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই আব্দুল মালেক খান গত শুক্রবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় প্রবেশ করে তিনজন ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দেন। সেখানে ‘মামলা’ থেকে অব্যাহতি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দেলোয়ার হোসেন নামের একজনের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা।
দেলোয়ার তিনজনকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর দেলোয়ার হোসেনকে চাপে রাখতে তারা গত শুক্রবার বিকেল ৪টার মধ্যে বাকি টাকা দিতে বলেন। টাকা দিতে তার পরিবারের সদস্যদের নানা হুমকি দিয়ে চলে যান ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়দানকারীরা।
পুলিশের ভাষ্য, ওই তিনজন দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন। পরে পরিবারটি উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে। ঘটনার দিন রাতে বিমানবন্দর থেকে প্রথমে নোমান রেজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরার জসীমউদ্দীন এলাকা থেকে অন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চার লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে নোমান ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিমানবন্দর থানার সাবেক সদস্যসচিব। সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে উত্তরা এলাকায় তার বিরুদ্ধে আরও অনেক চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
মূলত নোমানের টার্গেট ছিল বড় বড় ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের মামলার ভয় দেখিয়ে এবং মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে সহযোগিতা করার নামে তিনি মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করতেন। দাবি করা চাঁদার টাকা না দিলে মারধরের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর বাইরে পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে নোমান এবং তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী পুলিশকে জানিয়েছে, নোমান এবং তার সঙ্গীরা সমন্বয়ক পরিচয়ে মিথ্যা মামলায় ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদাবাজি করেন।
Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code