আজ রবিবার, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুক্তিপণ দিয়ে বাবা পেলেন ছেলের লাশ

editor
প্রকাশিত মার্চ ২১, ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ণ
মুক্তিপণ দিয়ে বাবা পেলেন ছেলের লাশ

Sharing is caring!


Manual5 Ad Code

টাইমস নিউজ

Manual6 Ad Code

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অপহরণের ২৪ দিন পর এক যু্বকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Manual7 Ad Code

নিহত মিলন হোসেন (২৩) পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও চাপাপাড়া এলাকার পাঞ্জাব আলীর ছেলে। তিনি দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে তাকে অপহরণ করা হয়।

এসব তথ্য জানিয়ে বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেফতার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বুধবার গভীর রাতে সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের শিবগঞ্জ মহেশপুর বিটবাজার এলাকার সিজান আলীর বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে মিলন হোসেনের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।’

Manual6 Ad Code

গ্রেপ্তার তিন জন হলেন- সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মহেশপুর বিটবাজার এলাকার সিজান আলী (২৮), আরাজি পাইকপাড়া এলাকার মুরাদ (২৫) এবং সালন্দর ইউনিয়নের শাহীনগর তেলিপাড়া এলাকার রত্না আক্তার রিভা (১৯)।

এ সময় মুরাদের কাছ থেকে চার লাখ ৯৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধরা বৃহস্পতিবার আসামি সিজান আলী বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। হত্যার বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে এলাকাবাসী। পরে জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।

মিলন হোসেনের পরিবারের সদস্যরা জানান, অনলাইনে এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় মিলন হোসেনের। ২৩ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পেছনে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মিলন।

Manual8 Ad Code

ওই দিন রাত ১টার দিকে মিলনের পরিবারকে মোবাইল ফোনে অপহরণের বিষয়টি জানানো হয় এবং ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়।

২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তিন লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। কিন্তু তখন অপহরণকারীরা মুক্তিপণ বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করে। ২৫ ফেব্রুয়ারি করা হয় ১০ লাখ টাকা। এভাবে বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে ১৫ লাখ; তারপর ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।

এই অবস্থার মধ্যে মিলনের পরিবার ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।

মিলন হোসেনের বাবা পাঞ্জাব আলী বলেন, ‘থানা পুলিশের কাছ থেকে ছেলেকে উদ্ধারে যথেষ্ট সাড়া না পেয়ে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা জোগাড় করি। অপহরণকারীরা ৯ মার্চ রাত ১০টার ঢাকাগামী ট্রেনে টাকা নিয়ে উঠতে বলে। এরপর চলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের সেনুয়া এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে টাকার ব্যাগটি বাইরে ছুড়ে ফেলে দিতে বলে অপহরণকারীরা। ১০ মিনিট পর টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তারা। বলা হয়, মিলনকে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাবে। কিন্তু খোঁজাখুঁজি করেও সেখানে মিলনের সন্ধান পাওয়া যায়নি।’

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অপহরণের তিন দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি মিলনকে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছিলাম আমরা। কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। প্রযুক্তির সহযোগিতায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরেই মিলনের লাশ উদ্ধার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতের আবেদন করা হয়েছে।’

ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, ‘গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিলনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।’

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code