আজ শুক্রবার, ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একীভূত হচ্ছে শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক, পরিচালনায় নতুন নীতিমালা

editor
প্রকাশিত মে ৫, ২০২৫, ০৩:২৯ অপরাহ্ণ
একীভূত হচ্ছে শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক, পরিচালনায় নতুন নীতিমালা

Oplus_16908288

Sharing is caring!

Manual2 Ad Code
সিনিয়র রিপোর্টারঃ
গত দেড় দশকে ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক অনিয়ম দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক সবচেয়ে বেশি লুটপাটের শিকার হয়েছে।
 ফলে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শরীয়াহভিত্তিতে পরিচালিত ব্যাংক ১০টি। এসব ব্যাংকের সম্মিলিত খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ২৩ শতাংশের বেশি।
জানা যায়, সংকটে থাকা এসব ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙেও খুব একটা সুফল মেলেনি। টাকা ছাপিয়ে দেওয়ার পরও আস্থা ফেরেনি গ্রাহকের।
তাই সমাধান হিসেবে একীভূত করে দু’টিতে নামিয়ে আনার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় গভর্নর। এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও সুফল নিয়ে বিশ্লেষকদের সন্দেহ আছে। তারা বলছেন, জোর করে একীভূত করা ঠিক নয়। এতে ভালো ফল পাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, আমি নিজেও একীভূতকরণের পক্ষে আছি।
 তবে জোর করে করানো…. একটা ব্যাংকের ব্যালেন্স শিট আরেকটা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হবে। একটির কার্যক্রম আরেকটির সঙ্গে এক হয়ে যাবে। তাই জোর করে এগুলো করানো ঠিক না। সফলতার প্রত্যাশা রাখি। তবে শেষ পর্যন্ত পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, ফরেনসিক অডিট, ড্যামেজ নিরুপণ ও ভ্যালুয়েশনটা হয় নাই। ব্রিজ ব্যাংকের আওতায় তাদের ফেলা হবে কি না, এই ধাপগুলো বাকি আছে। দুটো বড় ব্যাংক এক হলে ক্ষতির কিছু নাই। এটা আমরা সমর্থন করি। তবে বড় দুইটা ন্যারেটিভ যোগ করলে এটা বড় নেগেটিভ হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শরীয়াহভিক্তিক ব্যাংকের বেশ কয়েকটি সংকটে থাকা অবস্থায় স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনা কঠিন। এসব ব্যাংক একীভূত করে খাতভিত্তিক বিশেষায়িত ব্যাংককে রূপান্তর করা যেতে পারে বলে মনে করেন কেউ। আবার বিপরীত মতও রয়েছে অনেকেরই।
এনিয়ে মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, খাতভিত্তিক যেমন টেক্সটাইল খাতের জন্য একটা ব্যাংক দেওয়া যেতে পারে। এসএমই এর জন্য একটা ভিন্ন ব্যাংকও করা যেতে পারে বা যেকোনো ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। এই ধরনের স্পেসিফিক দায়িত্ব দিয়ে যেমন কৃষি ব্যাংক একটা উদ্দেশ্যে হয়েছে।
 চিন্তা করলে এটাকে আমি সামগ্রিকভাবে খারাপ মনে করি না।
অন্যদিকে, ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, বিশেষায়িত ব্যাংকিংয়ের অভিজ্ঞতা ভালো না আমাদের। ব্যাংকিংয়ে এক-দুইটা কার্যক্রম করে কার্যকর হবে না। আমরা এ রকম কথাবার্তা আগেও শুনেছি। ব্র্যাক ব্যাংক তো এসএমই ব্যাংকিং দিয়েই শুরু করেছিল। তাই এক-দুইটা কার্যক্রম করলেই ব্যাংক কার্যকর হয় না।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সংকট সমাধানে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্টও তৈরি করা হচ্ছে। সেখানেই একীভূতকরণের বিষয়ে বিস্তারিত দিক নির্দেশনা থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, কিছু ব্যাংক হয়তো একীভূত হবে। কিছু ব্যাংক অধিগ্রহণ হবে। আসলে কী হবে বা হলে কোন প্রক্রিয়ায় হবে তার বিস্তারিত এই ব্যাংক রেজ্যুলেশনে থাকবে। একীভূতকরণ যতটা জটিল, তার চেয়ে একটা সর্বজন গ্রহণযোগ্য নীতিমালা তৈরি করা আরও বেশি কঠিন। সেই কঠিন কাজটা যখন হয়ে যাবে তখন পরবর্তী ধাপটাও অনেক সহজ হয়ে যাবে।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংক একীভূতকরণের বিষয়ে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন পেতে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।তথ্যসূত্রে: যমুনা নিউজ
Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code