নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেছেন, নির্বাচনে কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ভুল হতে পারে, তবে কোনো অন্যায় বরদাস্ত করা হবে না।
অবাধ ও সুষ্ঠু একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)-এর সঙ্গে ‘সাংবাদিক/গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নীতিমালা ২০২৫’ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমদ। উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সাংবাদিকদের কাজ করার জন্য সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরি করতে কমিশন কাজ করছে উল্লেখ করে কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘আমরা সবাই চাই একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
এজন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতা অপরিহার্য। সাংবাদিকদের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো বিবেচনা করে গণমাধ্যম, ইসি এবং জনগণের জন্য স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।’
আস্থার সংকট এখন জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আমি ভালো, আপনি খারাপ-এভাবে বলার সুযোগ নেই।
কমিশনের প্রথম কাজ হচ্ছে আস্থা পুনরুদ্ধার করা।’ তিনি মনে করেন, সাংবাদিকদের নীতিমালা নিয়ে আরও আলোচনা, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও বিশ্লেষণ করলে ভুলের সম্ভাবনা কমবে এবং একটি ভালো নির্বাচন সম্ভব হবে।
সচিব আখতার আহমদ সাংবাদিকদের অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। মতবিনিময় সভায় আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেল প্রস্তাবিত নীতিমালা উপস্থাপন করে ইসির কাছে হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী।
উল্লেখ্য, আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ২৩ জুলাই ইসি সাংবাদিকদের জন্য একটি নীতিমালা প্রকাশ করে। এতে ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার, গোপন কক্ষে ছবি তোলা নিষিদ্ধ করা হয়।
বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন, তবে প্রিজাইডিং অফিসারকে জানাতে হবে; সর্বোচ্চ ১০ মিনিট ভেতরে থাকা যাবে; ভেতরে সাক্ষাৎকার নেয়া যাবে না-এমন বিধানও রাখা হয়।
আরএফইডি নেতারা এসব বিধিনিষেধের বিরোধিতা করে জানান, এতে সাংবাদিকদের অবাধ তথ্য প্রবাহ ব্যাহত হবে এবং অনিয়ম প্রতিরোধে ইসির উদ্যোগ ব্যর্থ হতে পারে।
তারা প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করার বিধান বাদ দেওয়ার পাশাপাশি অন্তত পাঁচজন সাংবাদিককে একসাথে ভোটকক্ষে প্রবেশের সুযোগ ও সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিলে শাস্তির বিধান যুক্ত করার দাবি জানান।