আজ মঙ্গলবার, ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আচরণবিধি গেজেট : এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণা, বিধিমালা লঙ্ঘনে প্রার্থিতা বাতিল

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১১, ২০২৫, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ
আচরণবিধি গেজেট : এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণা, বিধিমালা লঙ্ঘনে প্রার্থিতা বাতিল

Sharing is caring!

Manual3 Ad Code

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা, ১১ নভেম্বর, ২০২৫ (মঙ্গলবার ) : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আচরণবিধিতে প্রথমবারের মত নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। এক মঞ্চে প্রার্থীদের ইশতেহার ঘোষণাসহ আচরণবিধি মানতে দল ও প্রার্থীর অঙ্গীকারনামা দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রাখা হয়েছে।

আচরণবিধি ভাঙলে ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ জরিমানা এবং দলের জন্য দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিধান লঙ্ঘনে আরপিওতে প্রার্থিতা বাতিলেরও বিধান রয়েছে।

ভোটের প্রচারে ড্রোন ব্যবহার করা যাবে না। আচরণবিধিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিদেশে প্রচারণাতেও। একজন প্রার্থী তার সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবে না।

গতকাল (সোমবার) রাতে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ শিরোনামে এই গেজেট প্রকাশ করা হয়।

সোশাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে কড়াকড়ি আরোপ, অসৎ উদ্দেশ্যে এআই ব্যবহারে মানা, পোস্টার ও ড্রোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, নির্বাচনের সময় কি করা যাবে ও যাবে না তাও তুলে ধরা হয়েছে বিধিমালায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা: আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, কোন প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচার-প্রচারণা পরিচালনা করতে পারবে। তবে প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা দল বা প্রার্থী সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নাম, একাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডিসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্যাদি আগেই রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে।

প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা যাবে না।

ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য, কারও চেহারা বিকৃত করা ও নির্বাচন সংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ ক্ষতিকর কনটেন্ট বানানো ও প্রচার করা যাবে না।

প্রতিপক্ষ, নারী, সংখ্যালঘু বা অন্য কোন জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা উসকানিমূলক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না।

নির্বাচনী স্বার্থ হাসিল করার জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার করা যাবে না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কনটেন্ট শেয়ার ও প্রকাশ করার আগে সত্যতা যাচাই করতে হবে।

রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি, ভোটারদের বিভ্রান্ত করার জন্য কিংবা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোন প্রার্থী বা ব্যক্তির চরিত্র হনন কিংবা সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে, সামাজিক যোগাযোগ বা অন্য কোন মাধ্যমে, সাধারণভাবে বা সম্পাদনা করে কিংবা এআই দিয়ে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, পক্ষপাতমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর কনটেন্ট তৈরি, প্রকাশ, প্রচার ও শেয়ার করতে পারবে না।

গুজব ও এআই অপব্যবহার বন্ধে নির্বাচনী অপরাধ বিবেচনায় শাস্তির বিধান রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে।

Manual6 Ad Code

আরও বলা হয়, কোনো দল বা প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশে জনসভা, পথসভা, সভা-সমাবেশ বা কোন প্রচারণা চালাতে পারবে না।

Manual2 Ad Code

ভোটের প্রচারে থাকবে না পোস্টারের ব্যবহারও। একজন প্রার্থী তার সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবে না; দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট আর প্রস্থ ৯ ফুট।

নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোন ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোন প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে পারবে। তবে ভোটার স্লিপে প্রার্থীর নাম, ছবি, পদের নাম ও প্রতীক উল্লেখ করতে পারবে না।

Manual5 Ad Code

শুধু ডিজিটাল বিলবোর্ডে আলো ও বিদ্যুতের ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া অনান্য আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেটে পলিথিনের আবরণ এবং প্লাস্টিক (পিভিসি) ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না।

প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে; পলিথিন ও রেকসিনের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলে রাখতে হবে।

Manual8 Ad Code

রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রদত্ত অঙ্গীকারনামা: রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধির সকল বিধান মেনে চলবে এই মর্মে তফসিল-১ এ উল্লিখিত নমুনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় অঙ্গীকারনামাও জমা দিতে হবে।

প্রার্থীর অঙ্গীকারনামা: কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হিসাবে ঘোষিত হলে তাকে তফসিল-২ এ উল্লিখিত নমুনা অনুযায়ী অঙ্গীকার করতে হবে যে, তিনি সকল বিধান মেনে চলবেন। যদি তার বা তার কোন সহযোগীর বিধান লঙ্ঘন করে তাহলে প্রচলিত আইন বা বিধিমালার বিধান অনুযায়ী শাস্তি মানতে বাধ্য থাকবেন।

গণমাধ্যমের সংলাপ ও সব প্রার্থীর এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণার সুযোগ রাখা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট আসনে সব প্রার্থীকে নিয়ে একদিনে তাদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্র পাঠের ব্যবস্থা করবেন।

প্রার্থিতা বাতিল: যদি উৎস হতে পাওয়া রেকর্ড কিংবা লিখিত রিপোর্ট হতে কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করেছে বা চেষ্টা করেছে এবং অনুরূপ লঙ্ঘন বা চেষ্টার জন্য তিনি নির্বাচিত হবার অযোগ্য হতে পারে, তাহলে কমিশন বিষয়টি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ দেবে।

তদন্ত রিপোর্টে যদি দেখা যায়, প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা তার নির্দেশে বা তার পক্ষে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বিধির লঙ্ঘন করেছে বা চেষ্টা করেছে, যার জন্য তিনি নির্বাচিত হবার অযোগ্য হতে পারেন, তাহলে কমিশন, তাৎক্ষণিকভাবে আরপিও-এর বিধান অনুযায়ী সেই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের লিখিত আদেশ দিতে পারবে।বাসস

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code