আজ মঙ্গলবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যে কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হবে

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ০২:১০ পূর্বাহ্ণ
যে কারণে  অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হবে

Sharing is caring!

Manual4 Ad Code

টাইমস নিউজ

 

Manual1 Ad Code

ঘোষিত মুদ্রানীতির সংকোচনমুখী ধারা এবং ঋণের চড়া সুদ অপরিবর্তিত রাখার নীতি গ্রহণ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুদ্রানীতির কঠোর অবস্থান ধরে রাখার ফলে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্প্রসারণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

Manual7 Ad Code

চড়া সুদ হারের কারণে ব্যবসা খরচ বেড়ে যাবে। যা ব্যবসা বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

Manual5 Ad Code

এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার না বাড়ানো সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে শুধু নীতি সুদের হার চড়া রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

সোমবার ঘোষিত মুদ্রানীতি সম্পর্কে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। মুদ্রানীতি ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনের নেতারা বলেছেন, নীতি সুদহার ১০ শতাংশ ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বজায় রাখার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত উদ্বেগজনক। বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুদ্রানীতির কঠোর অবস্থানের ফলে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিনিয়োগের জন্য দেশের বেসরকারি খাত ব্যাংকগুলোর ঋণের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে থাকে। তবে উচ্চ সুদের হার ঋণের গতি কমিয়ে দেবে। পাশাপাশি পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেবে। ফলে পণ্যমূল্য বেড়ে গিয়ে মূল্যস্ফীতির হার আরও বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, নীতি সুদের হার বাড়ানো ও টাকার প্রবাহ কমানোর পরও মূল্যস্ফীতির হার বেশি কমেনি। জানুয়ারি-জুন মেয়াদের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৯ দশমকি ৮ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত বেসরকারি খাতকে কিছুটা আশাহত করেছে। যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রকৃত প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমকি ৩ শতাংশ। যা বিগত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তারা তারল্য সংকট এবং ক্রমবর্ধমান মন্দ ঋণ মোকাবিলায় আর্থিক খাতের প্রশাসনিক কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান।

Manual5 Ad Code

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, মুদ্রানীতিতে সুদহার না বাড়ানো সঠিক সিদ্ধান্ত। এই সময়ে মূল্যস্ফীতি কোন দিকে যাচ্ছে সেটা অনিশ্চিত। তবে শুধু নীতি সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে সেটা ধরে নেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। এখন যেহেতু নীতি সুদহার তিন ধাপে সাড়ে ৮ থেকে ১০ শতাংশে উঠানো হয়েছে তার প্রভাব তো এখনো বাজারে পুরোপুরি পড়েনি। এ অবস্থায় আরেকটু দেখা দরকার যে, সুদের হার বৃদ্ধি করা লাগবে কী, লাগবে না। সেটা আরও দু-তিন মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তখন যদি বাড়াতে হয়, পরে বাড়ানোটা ভালো হবে।

তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতির অন্য কারণগুলো যদি সরকার শনাক্ত করতে পারে এবং সেগুলো প্রতিকারের পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। খালি সুদের হার বাড়াতে থাকলাম এতে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে-এমনটা ভাবা ঠিক নয়।

ড. জাহিদ আরও বলেন, এই মুহূর্তে সুদহার কমানোটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেত। এখন বিনিয়োগের কথা ব্যবসায়ীরা বলছেন। তারা বলবেন, কারণ সুদহার কমলে তাদের আর্থিক খরচ কমবে। বিনিয়োগের অজুহাত দিয়ে সেটা বলা হয়, তবে সুদের হার কম থাকা সময়ে বিনিয়োগ বাড়েনি। তবে এ সময়ে যেহেতু মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনাটাই বড় অগ্রাধিকার সেক্ষেত্রে নীতি সুদহার কমালে আগুনে ঘি ঢালার মতো হয়ে যেত।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) গবেষণা পরিচালক এবং র‌্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়ানো হলে বা কমানো হলে কী ঘটতে পারে সে বিষয়ে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মূল্যস্ফীতি কমানো, বিনিয়োগ বাড়ানো ও সীমিত কর্মসংস্থানের চাপ আছে। সুদ বাড়ানো হলে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, আবার মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। কারণ মূল্যস্ফীতি সে হারে কমেনি, কিছুটা কমেছে মাত্র। সামনে রমজান মাস, মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক থাকছে। তাছাড়া সুদহার কমানো হলে বা কমলে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না।

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code