আজ শনিবার, ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বর্তমানে ‘ধর্ষণের ঘটনা বাড়েনি : সায়মা ফেরদৌস

editor
প্রকাশিত মার্চ ৭, ২০২৫, ১২:২৬ অপরাহ্ণ
বর্তমানে ‘ধর্ষণের ঘটনা বাড়েনি : সায়মা ফেরদৌস

Sharing is caring!


Manual4 Ad Code

টাইমস নিউজ 

সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সদস্য ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেছেন, ‘বর্তমানে ‘ধর্ষণের ঘটনা বাড়েনি’ ।’

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন ।
শুক্রবার দেশের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
বর্তমানে ‘ধর্ষণের ঘটনা বাড়েনি’ উল্লেখ করে ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনা এখন বেশি হচ্ছে এটি কিন্তু এমন নয়। তবে ধর্ষণ আগে হয়েছে বলেই যে এখনো হবে এটিও কোনো যুক্তি না। ধর্ষণ কখনোই হতে পারে না। ধর্ষণের মাত্রা বেড়েই চলছে, বেড়েই চলেছে। আমরা এর আগে দেখেছি, রোজা অবস্থায় ৯৯ বয়সের এক বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। সুতরাং এটা তো মানসিকতারই প্রতিফলন।’

Manual6 Ad Code

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীর দ্বারা হেনস্তার শিকার হন। এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে আদর্শের ঢাল। শিক্ষা-সভ্যতার চর্চা, লালন-পালন, ধারনের উচ্চতম বিদ্যাপীঠ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে শুধু নারী নয়, কোনো পুরুষের পোশাক নিয়ে কথা বলা বর্বরতা, অসভ্যতা।এই যুগে এসে অত্যন্ত লজ্জাজনক। নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে এটার সম্পর্ক আমি টানব না।’

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদ আমাদের মাথার মধ্যে গেড়ে গেছে। আমি যা বললাম তাই ঠিক। আমি যা বললাম তাই মানতে হবে। এটা তো ফ্যাসিবাদের অন্যরূপ। আমাদের শাসক দূর হয়েছে কিন্তু আমাদের ভেতরে যে ফ্যাসিবাদ ঢুকিয়ে গেছে সেটি দূর করবে কে?’

সায়মা ফেরদৌস বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ এটা দূরীকরণের একটা পর্যায়, একটা ধাপ। এটা যে এখন হচ্ছে সেটা হওয়ারই কথা ছিল। তবে এটি মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, ছাত্রী, নারী এবং এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে এটি আমার জন্য অত্যন্ত লজ্জার। আমি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। একদল তওহিদী জনতার নামে থানায় ঢুকে এত বড় সাহস দেখায় কিভাবে। কুরআন আমাদের কাছে অত্যন্ত সম্মানের। এটা ব্যবসার জিনিস না। এটা কোনো দলমত প্রচারের গ্রন্থ না। নারীকে তো চোখ তুলে তাকাতেই নিষেধ করে ইসলাম ধর্ম। কারো ওড়না আছে কিনা- সেটা তো পরিবার ছাড়া অন্য কারো মাথাব্যথা হওয়ার কথা না। ইসলামের মতে তো পুরুষদের কথা হচ্ছে মাটির দিকে তাকিয়ে হাঁটবেন, কে ওড়না পরল কে পরল না সেটা দেখার দায়িত্ব তো আপনার না! জবাবদিহিতার অধিকার তো এক মাত্র আল্লাহর।’

Manual2 Ad Code

নারীকে হেনস্তা করা মানুষের মজ্জাগত হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তো মনে করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা সবচেয়ে সম্মানিত। উপাচার্য কিংবা শিক্ষক যারা আছেন তাদের চেয়েও শিক্ষার্থীরা সম্মানিত। কারণ, তারা দেশ গড়ে। তাকে হেনস্তা করা কত বড় সাহস। আর এগুলো নিয়ে কথা বলা এটা তো আমাদের মজ্জাগত হয়ে গেছে। এটা তারই প্রতিফলন। নতুন বাংলাদেশে এমন হওয়ার কথা ছিল না।’

Manual2 Ad Code

 

Manual2 Ad Code

পরিকল্পিতভাবে নারীদের প্রতি সহিংসতার বিষয়গুলো সামনে আসছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে নারীদের প্রতি সহিংসতার বিষয়গুলো সামনে আসছে। এটি অবশ্যই পরিকল্পিত। এতে যারাই জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশে আইন আছে, বিচার ব্যবস্থা আছে, শাসন আছে। কয়েক দিন আগে মব নিয়ে গুলশানের বাসায় হামলা হলো। আমাদের কে অধিকার দিয়েছে যে একজনের বাসায় ঢুকে যেতে পারব। এতে আবু সাঈদদের অপমান করা হয়ে। এই জুলাই অভ্যুত্থানে যারা আহত তাদের আত্মাহুতির সঙ্গে প্রতারণা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখানে অবশ্যই একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যিনি ঢাবির ছাত্রীকে হেনস্তা করেছেন তার মধ্যে কিন্তু অপরাধবোধের কোনো উপলব্ধি ছিল না। আপনি কখনোই কারো পোশাক নিয়ে কথা বলতে পারেন না- এটা অসভ্যতা। কে দাড়ি রাখবে, কে রাখবে না- এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সে আলখাল্লা পরবে না, প্যান্ট পরবে এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন ঢাবির আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগের আলোচিত অধ্যাপক সায়মা ফেরদৌস। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষেও তিনি সোচ্চার ছিলেন। সম্প্রতি তিনি সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সদস্য।

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code