Sharing is caring!

সাইফুল ইসলাম সুমন, বিয়ানীবাজার থেকে ফিরেঃ
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে অবৈধ গবাদিপশু চোরাচালান ও চামড়া পাচার রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া সীমান্তে বসবাসরত স্থানীয় জনসাধারণের জানমাল নিরাপত্তা সহ চোরাচালান, মাদক, মানব ও অস্ত্র পাচার প্রতিরোধ এবং আন্ত: সীমান্ত অপরাধ দমনে বিজিবি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারে সেজন্য বিজিবি সীমান্তের নিরাপত্তা বিধান, দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং ঈদ জামায়াত সহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিক দায়িত্বে নিরাপত্তা বিধানে সদা সচেষ্ট ও তৎপর থাকবে।
সীমান্ত নিরাপত্তা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সীমান্ত এলাকার প্রতি ইঞ্চি সীমান্ত সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করছে বিজিবি। সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে পুশ-ইন প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
শুক্রবার (৬ জুন) দুপুরে বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজার সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সীমান্তের সার্বিক বিষয় নিয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক চৌধুরী। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের সহকারী পরিচালক মাহফুজার রহমান পিপিজিএমএস সহ জুড়ী, বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।

মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক চৌধুরী আরো বলেন, বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন (৫২ বিজিবি) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত রক্ষাকারী ইউনিট হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সীমায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সীমান্তে সকল ধরণের অপরাধ প্রতিহত করা। এবারের ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারে সেজন্য বিজিবি সদস্যরা সীমান্তের নিরাপত্তা বিধান, দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং ঈদ জামায়াত সহ অন্যান্য অনুষ্ঠানিক দায়িত্বে নিরাপত্তা কাজ করবে। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ গবাদি পশু চোরাচালান ও চামড়া পাচার রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত কুরবানির পশু দেশে মজুদ রয়েছে। দেশীয় খামারিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং পার্শ্ববর্তী দেশ হতে যাতে অবৈধভাবে গবাদি পশু প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। একইভাবে ঈদের পর কুরবানির চামড়া যাতে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার না হয় সেজন্যও বিজিবি সীমান্তে সর্বোচ্চ তৎপর।
সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তে বিএসএফের পুশইন নিয়ে তিনি বলেন, বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন (৫২ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মোট ৩১৬ জন (পুরুষ-১০১ জন, নারী-১২১ জন শিশু-৯২ জন এবং FOMN-০২ জন) (সিলেট জেলা-৫৩ জন এবং মৌলভীবাজার জেলা-২৬৩ জন) বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক পুশইন করা হয়েছে। পুশইনকৃত ব্যক্তিদের বিজিবি আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের প্রদত্ত ঠিকানা অনুযায়ী বাংলাদেশী নাগরিক বলে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃত ব্যক্তিদের জিডিমূলে সুস্থ্য অবস্থায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতঃ বিয়ানীবাজার, বড়লেখা এবং জুড়ী থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে পুশ-ইন প্রতিরোধে বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে সাথে নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিএসএফ পুশ-ইন করায় বিজিবি বিএসএফের সাথে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ, বিওপি/ক্যাম্প কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক এবং ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে মৌখিক ও লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সীমান্ত নিরাপত্তা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন (৫২ বিজিবি) এর প্রতিটি সদস্য সীমান্ত এলাকার প্রতি ইঞ্চি সীমান্ত সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার শান্তি, নিরাপত্তা ও অপরাধমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে আমাদের সাথে স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যে কোনো ধরনের সন্দেহজনক ব্যক্তি বা তৎপরতা পরিলক্ষিত হলে দ্রুত বিজিবিকে অবহিত করার আহ্বান জানান তিনি। এসময় তিনি সকল বিষয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। বিজিবি হবে ‘সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক’ এই লক্ষ্য অর্জনে বাহিনীর প্রতিটি সদস্য উজ্জীবিত ভাবে নিরলস দায়িত্ব পালন করে আসছেন বলে তিনি জানান।