আজ শুক্রবার, ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কমলগঞ্জে সাবেক কৃষিমন্ত্রীর ভাই সাবেক চেয়ারম্যানের ক্ষমতার দাপটে অর্ধশতাধিক পরিবার ভিটা মাটি হারিয়েছে

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৭, ২০২৪, ১২:০৫ অপরাহ্ণ

Sharing is caring!

Manual4 Ad Code

জাফর ইকবাল মৌলভীবাজার থেকে,

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ১ নং রহিমপুর ইউনিয়নের প্রতাপী( চরগাঁঁও) অর্ধ শতাধিক পরিরার সাবেক কৃষিমন্ত্রীর ভাই সাবেক চেয়ারম্যানের ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘ ৬ বছর যাবৎ ভিটে মাটি হারিয়ে ভাসমান জীবন কাটাচ্ছে। আওয়ামীলীগের শাসন আমলে সাবেক কৃষি মন্ত্রী আব্দুস শহীদের ভাই ১ নং রহিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন বদরুল( বর্তমানে কারাগারে) ধলাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মানে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্বারা ভূমি অধিগ্রহন না করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাদের ভিটে মাটি। কারো মাথা গুজার ঠাঁই নাই। কেহ বাস করছেন নদীর ধারে ছোট ঘর তৈরী করে। কারও ঠিকানা হয়েছে কলোনীতে। কেউবা বাঁধের উপর অস্থায়ী ঢেড়া তৈরী করে ৬ বছর যাবৎ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সবারই ছিল নিজস্ব জমি ঘর বাড়ি।

Manual1 Ad Code

আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক কৃষি মন্ত্রী আব্দুস শহীদের ভাই ১ নং রহিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন বদরুল( বর্তমানে কারাগারে) ক্ষমতার দাপটে জোর পুর্বক হুমকি দামকি দিয়ে ধলাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরী করতে গিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছেন তাদের বাড়ি ঘর। এমনকি ১ দিনের নবজাতক সন্তান নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যানের হাতে পায়ে ধরেও ঘর ও মালামাল সরানোর সময় পাননি অনেকে। সময় চাওয়ায় উল্টো তাদেরে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে নেওয়ার হুমকি দেন সাবেক চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন বদরুল।

Manual6 Ad Code

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাযায়, কমলগঞ্জ উপজেলার প্রতাপী চরগাঁও এলাকায় ধলাই নদীর ২ কি: মি: বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ছিলনা। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রতাপী চরগাঁও এলাকায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ কি: মি ধলাই নদীর বাঁধ নির্মাণ করা পরিকল্পনা করা হয়। কোন প্রকার ভূমি অধিগ্রহন ছাড়া কাজ করাতে রাজি ছিল মৌলভীবাজার পান্নি উন্নয়ন বোর্ড। তাই বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ দেওয়ার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন বদরুল স্বেচ্ছায় জমি দিতে রাজি বলে জমি মালিকদের স্বাক্ষার করা অনুমতি পত্র জমা দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডে। কিন্তু ঘর বাড়ি হারানো মালিকরা স্বেচ্ছায় কোন অনুমতি দেননি।

প্রতাপীর ভিটে মাটি হারনো আব্দুর রশিদ, আব্দুল কদ্দুস, মফিজুল ইসলাম, রিজু আহমদ, গিয়াস উদ্দিন, সিরাজ উদ্দিন, মনির মিয়া, খোরশেদ মিয়া, আব্দুল আলী, সিরাজুল ইসলাম সহ অর্ধ শতাধিক ভিটেমাটি হারানো লোক বলেন, সাবেক কৃষি মন্ত্রীর আব্দুস শহীদের ভাই ইফতেখার হোসেন বদরুল ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল আবার ২০০৬ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১ নং রহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। আব্দুস শহীদ চীফ হুইপ ও পরে কৃষি মন্ত্রী হওয়ায় চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসের বদরুল ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। সে সময় ধলাি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মানের অজুহাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডর টাকা লুটপাটের জন্য জমি দাতাদের কোন অনুমতি ছাড়া ভূয়া স্বাক্ষর দিয়ে জোর পুর্বক ড্রেজার মেশিন দিয়ে ঘর বাড়ি ভেংঙ্গে দেন। বাস্তুচ্যুত করেন অর্ধশতাধিক পরিবার। ঘর বাড়ি ভাংঙ্গার সময় আশ্বাস দেন ২ মাসের ভিতর সরকারী খাস জমিতে ঘর তৈরী করে দেবেন। পরে বছরের পর বছর চলে গেলেও কেউ পায়নি সরকারী খাস জমিতে কোন ঘর। অর্ধাশতাধিক পরিবারের শত শত মানুষ ভাসমান অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন। প্রতাপী চরগাঁও এলাকার ভিটে মাটি হারানো মানুষ মৌলভীবাজার জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক আবু হানিফের সহযোগীতায় ১ নং রহিমপুর ইউনিয়নের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিতাংশু কর্মকার বরাবরে পুর্ণবাসন চেয়ে আবেদন করেছেন।

মৌলভীবাজার নাগরিক কমিটির সংগঠক আবু হানিফ বলেন, প্রতাপী চরগাঁও এর অর্ধশতাধিক পরিবারকে ভূমিহীন করেছেন আওয়ামীলীগের শাসন আমলে সাবেক কৃষি মন্ত্রী আব্দুস শহীদের ভাই ১ নং রহিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন বদরুল। ক্ষমতার দাপটে নিজ স্বার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ডে ভূমি অধিগ্রহন লাগবেনা মর্মে এলাকাবাসী ভূয়া অনুমতি পত্র দাখিল করে ধলাই নদী বাঁধ তৈরী করতে অর্ধশতাধিক পরিবারকে ঘর বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেন। তাদের ক্ষতিপুরন দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরবর্তীতে কিছুই করা হয়নি।

এব্যাপারে রহিমপুর ইউনিয়নের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিতাংশু কর্মকার বলেন, ভিটে মাটি হারানো অসহায় লোক গুলোর আবেদন গ্রহন করেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠাবো।

Manual6 Ad Code

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জাবেদ ইকবাল বলেন, সে সময় আমি ছিলামনা। তবে রেকর্ড পত্রে দেখা যাচ্ছে ধলাই নদীর প্রতাপী এলাকায় ভূমি অধিগ্রহন করা হয়নি। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সাবেক চেয়ারম্যান এলাকাবাসী স্বেচ্ছায় বাঁধ নির্মানের জন্য জমি দিতে রাজি মর্মে অঙ্গিকার নামা জমা দেন। এর ভিক্তিতে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ কি: মি: বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মান করা হয়।

Manual3 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code