Sharing is caring!

সউদ আব্দুল্লাহ, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে শ্যালকের ছুরিকাঘাতে দুলাভাই নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৩০ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কালাই উপজেলার পুনট পাঁচপাইকা পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত সহিফুল ইসলাম (৫৫) বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের আপসোন গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। ঘাতক জুয়েল রানা (৩২) একই গ্রামের জলিল হোসেনের ছেলে ও সহিফুল ইসলামের শ্যালক।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, পারিবারিক বিষয়ের আলোচনা করতে সকালে জুয়েলের বাবা জলিল হোসেন তাঁর তিন জামাই ও ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসেন। আলোচনায় উঠে আসে জুয়েলের মানসিক অবস্থার অবনতি ও তাঁর মাদকাসক্তি। এ সময় তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জুয়েল। এক পর্যায়ে সে তার দুলাভাই সহিফুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠলে জুয়েল বাড়ির বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার তিন দুলাভাই তাকে বাধা দেন। হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে দৌড়ে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে জুয়েল। তার পিছু পিছু ঘরে ঢোকেন দুলাভাইরাও। ঠিক তখনই জুয়েল ঘরের মধ্যে রাখা একটি ধারালো চাকু নিয়ে সহিফুল ইসলামের বগলের নিচে সজোরে আঘাত করে। মুহূর্তেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সহিফুল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জনতা মাঠ থেকে জুয়েলকে ধরে ফেলে। খবর পেয়ে কালাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার হাত থেকে জুয়েলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা মর্গে পাঠায়।
এদিকে,সহিফুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাঁর গ্রামের লোকজন এসে জুয়েলের বাড়িতে হামলা চালায়। উত্তেজিত জনতা বাড়িতে থাকা দুটি গরু, খাদ্য সামগ্রী ও আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
নিহতের চাচা আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমার ভাতিজাকে সকালে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। শ্বশুর-শ্যালক মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা আনিছুর রহমান বলেন, আমি নিজ চোখে দেখেছি দুলাভাইয়ের রক্তাক্ত মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। পুলিশ এসে জুয়েলকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা এখনো পরিস্কার না হলেও তদন্ত করলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। তবে লুটপাটের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান, ঘাতক জুয়েল রানা বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।