আজ শনিবার, ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাগল খাওয়ার অপরাধে অজগর সাপটিকে হত্যা 

editor
প্রকাশিত আগস্ট ১, ২০২৫, ০১:২৭ অপরাহ্ণ
ছাগল খাওয়ার অপরাধে অজগর সাপটিকে হত্যা 

CREATOR: gd-jpeg v1.0 (using IJG JPEG v62), quality = 70?

Sharing is caring!

তিমির বনিক:
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় ছাগল খাওয়ার অপরাধে অভিযুক্ত একটি বিশাল আকৃতির অজগর সাপকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৩১শে জুলাই ) বিকেলে উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা বোবরথল (করইছড়া) গ্রামে।
এই ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এদিকে এ ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, একটি অজগর সাপকে হত্যার পর সেটিকে ঘিরে স্থানীয় লোকজন দাঁড়িয়ে আছেন। পাশে একটি মৃত ছাগল পড়ে রয়েছে। স্থানীয় দাঁড়িয়ে থাকা সবার হাতে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে বোবরথল (করইছড়া) গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে একে একে ৫-৬টি ছাগল নিখোঁজ হয়। এলাকার লোকজন শুরুতে ধারণা করেছিলেন ছাগলগুলো হয়ত চোরেরা চুরি করে নিয়ে গেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন দেখতে পান একটি বিশাল আকৃতির অজগর সাপ একটি ছাগল গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে। এ বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে লাটি ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অজগরসাপটিকে ঘিরে ফেলেন এবং একপর্যায়ে সাপটিকে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন।
উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান শুক্রবার (০১ আগষ্ট) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুনেছি বোবরথল(করইছড়া) গ্রামের লোকজনদের কয়েকটি ছাগল খেয়ে ফেলে অজগরটি। ঘটনার সময় একটি ছাগল খাচ্ছিল সাপটি তা দেখে স্থানীয় লোকজন অজগর সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন।
স্থানীয় পরিবেশকর্মী সাঈফ আহমদ ইয়াসের বলেন, বন্যপ্রাণী পরিবেশের সাপ একটি অংশ, তারা আমাদের শত্রু নয়। একটি ছাগল খাওয়াকে কেন্দ্র করে অজগরের মতো একটি সাপকে পিটিয়ে মারা সত্যিই দুঃখজনক। এটি শুধু অমানবিক নয়, আইনগতভাবেও অপরাধ। এ ঘটনা প্রমাণ করে-আমাদের এখনো বন্যপ্রাণী সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতনতার অভাব। তিনি বলেন, বনবিভাগের উচিত দুর্গম এলাকায় নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে সাধারণ মানুষকে বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতন করা। অন্যথায় এ ধরনের ঘটনা হঠাৎ করে থামানো সম্ভব হবে না।
বনবিভাগের বড়লেখা রেঞ্জ সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. রেজাউল মৃধা শুক্রবার বিকেলে জানান, ঘটনাটি শুনে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানানো হয়েছে। তারা ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেবে।
এবিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।