Sharing is caring!

তিমির বনিক:
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা-ভ্যান উচ্ছেদ বন্ধ, দ্রব্যমূল্য কমানো ও রিকশা ভাড়া পুনঃনির্ধারণসহ ৭ দফা দাবিতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন।
বুধবার (২৭শে আগস্ট) দুপুরে শহরের চৌমুহনাস্থ সংগঠনের কার্যালয় থেকে মিছিলসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে তারা। জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. সোহেল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক দুলাল মিয়া, সহ-সভাপতি গিয়াসউদ্দিন, জসিমউদ্দিন সেবক ও মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনের নিকট স্মারকলিপি জমা দেন। এসময় তারা রিকশা শ্রমিকদের সমস্যা-সংকট তুলে ধরে তা সমাধানের দাবি জানান।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, রিকশা-ভ্যান শ্রমিকরা প্রতিদিন অমানবিক কষ্ট সহ্য করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। অথচ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে তাদের জীবন-জীবিকা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। এর মধ্যে শহরে ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যান উচ্ছেদের উদ্যোগ শ্রমিকদের আরও দুর্বিষহ পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
ইউনিয়নের নেতারা দাবি করেন, ২০২২ সালের ৪ঠা এপ্রিল উচ্চ আদালতের রায়ে মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত তিন চাকার যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও আঞ্চলিক সড়ক ও শহরের ভেতরে এর চলাচলে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু মৌলভীবাজার শহরে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে, যা শ্রমিকদের জীবিকার বিরুদ্ধে অন্যায় ও অমানবিক। অথচ এসব রিকশা-ভ্যান এখনও অবাধে বিক্রি হচ্ছে খোলা আম দৃশ্যমান বিভিন্ন শোরুমে।
তাদের অভিযোগ, অধিকাংশ ব্যাটারি চালিত রিকশার মালিকই হচ্ছেন শ্রমিকরা নিজেরাই, যারা এনজিও ও মহাজনের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে কিংবা শেষ সম্বল বিক্রি করে রিকশা কিনেছেন। কম পরিশ্রমে যাত্রী পরিবহন এবং সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক হওয়ায় ব্যাটারি রিকশা ইতোমধ্যেই যাত্রীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় অবাধে চললেও মৌলভীবাজার শহরে উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে,যা শতশত শ্রমিকের জীবিকা সংকট তৈরি করবে।
শ্রমিক ইউনিয়নের ৭ দফা দাবি:
১. উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী আঞ্চলিক সড়ক ও শহরের ভিতরে ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যান চলাচলে বাঁধা না দেওয়া এবং অবিলম্বে উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ করা।
২. বর্তমান বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে রিকশা ভাড়া পুনঃনির্ধারণ।
৩. যানজট নিরসনে যত্রতত্র অবৈধ গাড়ি পার্কিং বন্ধ।
৪. শহরে পর্যাপ্ত রিকশা স্ট্যান্ড স্থাপন।
৫. রিকশা শ্রমিকদের উপর সকল হয়রানি, নির্যাতন বন্ধ।
৬. রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ও শ্রমজীবী জনগণের জন্য স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের রেশনিং চালু এবং সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তি।
৭. শাহমোস্তফা সড়ক ও শ্রীমঙ্গল সড়কের সংযোগস্থলে ট্রাফিক গোলচত্বর নির্মাণ।