আজ সোমবার, ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভবিষ্যতে গণমাধ্যমে একটি শক্তিশালী এবং স্বাধীন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে-কমিশন প্রধান কামাল আহমদ 

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৬:২১ অপরাহ্ণ
ভবিষ্যতে গণমাধ্যমে একটি শক্তিশালী এবং স্বাধীন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে-কমিশন প্রধান কামাল আহমদ 

Sharing is caring!

Manual8 Ad Code
উৎফল বড়ুয়া, সিলেট
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, সাংবাদিকরা সোচ্চার হলে গণমাধ্যম অঙ্গন থেকে ফ্যাসিস্টরা বিদায় হবে, সংস্কারও হবে।অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও পরবর্তী নির্বাচিত সরকার অবশ্যই সংস্কার করবে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র আ’লীগের তোষণনীতি ও গুণকীর্তনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করায় ফ্যাসিস্ট আমলে টিভি চ্যানেলগুলো লাইসেন্স পায়।এদের কাছে কি আশা করবেন।এরা গণমানুষের পক্ষে কোন ভূমিকা রাখেনি।তিনি বলেন,গত ৬মাসে ফ্যাসিস্টদের দোসর কোন গণমাধ্যমের ডিক্লারেশনও সরকার বাতিল করেনি।এদের মালিকানাও বদল হয়নি, এদের বিরুদ্ধে কোন মামলাও হয়নি। এরা অনুতপ্তও নয়।
সাংবাদিকদের কন্ঠস্বর আরো তীব্র করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন,সরকারী অফিস সহ গণমাধ্যমের সকল জায়গা থেকে দুর্নীতিকে উচ্ছেদ করতে হবে।
কামাল আহমদ রোববার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি,সিলেট এর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সিলেট বিভাগের প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সাথে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য শামসুল হক জাহিদ, বেগম কামরুন্নেসা হাসান এবং আবদুল্লাহ আল মামুন।
আমরা অনলাইন গণমাধ্যমকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছি উল্লেখ করে কামাল আহমদ বলেন,এ বিষয়ে ভূল বোঝার কোন অবকাশ নেই।ভবিষ্যতে গণমাধ্যমে একটি শক্তিশালী এবং স্বাধীন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে, যেখানে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা রক্ষা পাবে এবং তাদের কর্মক্ষেত্রের সকল বিষয়ে জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন,সাংবাদিকদের জীবনের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত থেকে সংবাদমাধ্যমকে মুক্ত রাখতে হবে। এছাড়া মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ জানান, এই সংস্কার কমিশনের উদ্দেশ্য সংবাদপত্রকে স্বাধীন, শক্তিশালী এবং বস্তুনিষ্ঠ করা। তিনি বলেন, দেশে কোনো নিয়ম মেনে টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল এবং রেডিও অনুমোদন দেয়া হয়নি, যার ফলে একই খবর বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে এবং পাঠক বৈচিত্র্য পাচ্ছেন না।
তিনি আরও বলেন, গত দেড় দশকে সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। ওয়েজ বোর্ডের মালিকরা বাস্তবায়ন করেননি, তবে তারা সুবিধা নিয়েছে। যদি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা যায়, তবে সাংবাদিকদের সামাজিক মর্যাদা ও পেশাদারিত্ব ক্ষুণ্ন হবে।
কমিশন প্রধান জানান, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মতামত ও সুপারিশ জমা দিতে পারবেন। প্রাপ্ত মতামত বিবেচনা করে গণমাধ্যমে সংস্কার আনার জন্য কমিশন তার সুপারিশ পেশ করবে।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ সভায় আরো বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ন্যূনতম একটি বেতনের নিশ্চয়তা থাকা দরকার। তাঁদের আর্থিক সংকট নিরসন না করে যারা গণমাধ্যম পরিচালনা করে তারা দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছেন।এ শিল্পে সংকটের যে সামগ্রিক চিত্র সেটা খুবই হতাশাজনক উল্লেখ করে সাংবাদিক কামাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ পাঠক-দর্শক-শ্রোতার গণমাধ্যমের প্রতি আস্থার ঘাটতির কারণ খুঁজে বের করা হবে। সেই জনমত সমীক্ষার ভিত্তিতেই গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংস্কারের নীতিমালা প্রস্তুত করবে।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে অংশীজনের মতামত সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে মন্তব্য করে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতাদি নিশ্চিত করা এবং সাংবাদিকতার নীতিমালা বাস্তবায়ন করা গেলে দুর্নীতি কমে যাবে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরে আসবে।
সংস্কার কমিশনের প্রধান সাংবাদিক কামাল আহমেদ আরো বলেন, পত্রিকায় সরকারি বিজ্ঞাপন, প্রচার সংখ্যা নির্ধারণ ও আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা সংক্রান্ত যেসব জালিয়াতি আছে, সেগুলো বন্ধের পথ খুঁজে বের করা হবে। পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন সংক্রান্ত যে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে – সে বিষয়েও সংস্কার কমিশন সুপারিশ করবে।
সাংবাদিক প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার জন্য এ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। গণমাধ্যমগুলো যাতে যথাযথভাবে তাদের ভূমিকা পালনে সক্ষম হয়, কমিশন সে উপযোগী নীতিমালা প্রণয়নে সুপারিশ করবে। কমিশন সংস্কার বিষয়ে যেসব সুপারিশ করবে সেগুলো বাস্তবায়নে নির্বাচিত সরকারের প্রতি চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান সাংবাদিক কামাল আহমেদ।
সিলেট বিভাগের চারটি জেলায় কর্মরত প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থেকে তাঁদের সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code