আজ মঙ্গলবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কার, সক্ষমতা ও সহযোগিতার আহ্বান: টাওয়ারকো বিল্ড ফরোয়ার্ড ফোরাম ২০২৫ অনুষ্ঠিত

editor
প্রকাশিত জুলাই ২১, ২০২৫, ১২:০০ অপরাহ্ণ
সংস্কার, সক্ষমতা ও সহযোগিতার আহ্বান: টাওয়ারকো বিল্ড ফরোয়ার্ড ফোরাম ২০২৫ অনুষ্ঠিত

Sharing is caring!


Manual5 Ad Code

প্রেস বিজ্ঞপ্তি,

[ঢাকা, ২১ জুলাই ২০২৫] ডিজিটাল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে দ্রুত নীতিগত সংস্কার, অবকাঠামোগত সক্ষমতা ও শক্তিশালী আন্তঃখাত সহযোগিতার তাগিদ দিয়েছে দেশের টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো খাতের শীর্ষ কোম্পানিগুলো। সম্প্রতি রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত ‘টাওয়ারকো বিল্ড ফরোয়ার্ড ফোরাম ২০২৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সমন্বিত এ উদ্যোগের ঘোষণা দেয় প্রতিষ্ঠানগুলো।

Manual6 Ad Code

‘ইউনিফায়িং টাওয়ারকো ফর আ স্মার্টার বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই ফোরামে টাওয়ার কোম্পানিগুলোর ভূমিকা তুলে ধরা হয়, যারা দেশের ৯০ শতাংশের বেশি মোবাইল নেটওয়ার্ক কভারেজ নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে সারাদেশে সংযোগ প্রদানের ভিত্তি স্থাপন, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছে টাওয়ারকোগুলো।

ফোরামের মূল আকর্ষণ ছিল একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনা, যেখানে দেশের শীর্ষ লাইসেন্সপ্রাপ্ত টাওয়ার কোম্পানিগুলোর সিনিয়র এক্সিকিউটিভরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় তারা এ খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী।

টেলিকম খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা বিটিআরসি’র নতুন লাইসেন্সিং প্রকল্প এবং প্রস্তাবিত ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড কানেক্টিভিটি সার্ভিস প্রোভাইডার (এন আইসিএসপি) কর্মকাঠামোটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দক্ষ টেলিকম অবকাঠমোর ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে এগুলো সময়োপযোগী ও অগ্রগামী পদক্ষেপ। তারা বলেন, এই নীতিগত সংস্কারগুলো টাওয়ার কোম্পানির এগিয়ে যাওয়ার পথ প্রসারিত করতে এবং দেশব্যাপী সংযোগের কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করতে পারে।

Manual2 Ad Code

তবে তারা এও বলেছেন  নীতির স্বচ্ছতা এবং বাস্তবায়নের দিক থেকে এখনো জটিলতা রয়েছে। ডিএএস ও আইবিএস সল্যুশনের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে; উভয়ই নির্ভরযোগ্য ইনডোর কভারেজ নিশ্চিত করতে আবশ্যক এবং মোবাইল ডাটা ট্রাফিকের ৮০ শতাংশের বেশি হয় ইনডোরে। নিরপেক্ষ হোস্ট মডেলে উল্লেখযোগ্য প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। তবে টাওয়ারকো নেতৃবৃন্দ ব্যাটারি চুরি, সাইট অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতা এবং পরিবেশবান্ধব ও টেকসই জ্বালানির মতো দীর্ঘ দিনের পরিচালনগত চ্যালেঞ্জগুলো দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। বক্তারা একীভূত মান, সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় এবং ঘুরে দাঁড়ানোর উপযোগী ও টেকসই সল্যুশনে বিনিয়োগের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী বলেন, “দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি উন্নয়নে টেলিযোগাযোগ খাত অন্যতম প্রধান সহায়ক। এ খাতের সর্বোচ্চ কার্যকারিতা পেতে আন্তঃখাত সমন্বয় ও সহযোগিতা বজায় রাখা সবচেয়ে জরুরী। বর্তমান ইন্ডাস্ট্রির আন্তঃখাত সমন্বয় পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিংসহ সার্বিক টেলিযোগাযোগ খাতের অধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই আমরা টেলিকমিউনিকেশনস নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং সংস্কার নীতি ২০২৫ প্রস্তাব করেছি।“

ইডটকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (সিএমডি) সুনীল আইজ্যাক বলেন, “এখন বিনিয়োগকারীরা বাজারের নিশ্চয়তা, পলিসি প্রেডিক্টিবিলিটি, সর্বোপরি ইকোসিস্টেমের সামঞ্জস্যতার দিকে নজর দিচ্ছেন। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া গেলে টাওয়ারকো খাতে কৌশলগত পুঁজি এবং দেশের টেলিকম নেটওয়ার্কের মান বাড়বে। একইসাথে সার্বিক ডিজিটাল সুবিধাপ্রাপ্তি বা সেবা ব্যবহারের খরচ কমবে।“

ফ্রন্টিয়ার টাওয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সিরাজুস সালেহীন বলেন, “টাওয়ারকো ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা ব্যাটারি চুরি থেকে শুরু করে দীর্ঘ অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং সহাবস্থানের জন্য প্রণোদনার অভাব সহ নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে থাকি। আজকের এ আয়োজনের মাধ্যমে সে চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করতে এক সময়োপযোগী প্ল্যাটফর্ম তৈরী হলো।“

Manual8 Ad Code

আয়োজনটির মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ টাওয়ারকো অ্যাসোসিয়েশন’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। চারটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত টাওয়ারকো মিলে গঠিত এ সংগঠন মূলত টেলিযোগাযোগ খাতে অ্যাডভোকেসি, নলেজ শেয়ারিং এবং রেগুলেটরি এঙ্গেজমেন্ট এগিয়ে নিতে কাজ করবে। এছাড়াও সংস্থাটি বিটিআরসি, ডাক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মতো সরকারি সংস্থাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠবে। টেলিকম খাতে বিভিন্ন নীতি প্রণয়নে সহায়তা করার পাশাপাশি ৫জি, আইওটি এবং স্মার্ট সিটি উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রস্তুতিও নিশ্চিত করবে।

সামিট টাওয়ারস লিমিটেডের চিফ টেকনোলজি অফিসার মো. নূর-এ-আলম সিদ্দিকী জানান, “দেশের ডিজিটাল জিডিপি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পূর্ণ সক্ষমতা রয়েছে টাওয়ারকোর খাতের। তবে এর জন্য আমাদের এ খাতে বিদ্যমান সমস্যা ও রেগুলেটরি জটিলতা দূর করা প্রয়োজন। আজকের এই দিনটি মূলত আমাদের সে প্রস্তুতিরই অংশ বলা যায়।“

Manual7 Ad Code

ফোরামের আলোচনা আরও অর্থবহ করে তোলেন এরিকসন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুস সালাম এবং ইডটকো গ্রুপের স্ট্র্যাটেজি ডিরেক্টর গায়ান কোরালেজ। তারা বলেন, মোবাইল প্রযুক্তি বিশেষ করে ফাইভজি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশীদের তুলনায় বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে উৎপাদন ও অন্যান্য শিল্প খাতে আরও অগ্রগতি ঘটতে পারে।

এই সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে হলে টেলিকম ইকোসিস্টেমের সব অংশীজনদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে, যাতে ব্যয় সাশ্রয়ী ও টেকসই উপায়ে প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা যায়। এছাড়াও, প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল ডিজিটাল সেবার চাহিদা পূরণে এই খাত জুড়ে ক্রমাগত উদ্ভাবন, বৃহত্তর অটোমেশন এবং আরও অবকোঠামো ও সম্পদের কৌশলগত ভাগাভাগি প্রয়োজন।

বাংলাদেশের ডিজিটাল ভবিষ্যত আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার উদ্দেশ্যে সংস্কারমুখী, বিনিয়োগবান্ধব ও উদ্ভাবনী টাওয়ার ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে ‘টাওয়ারকো বিল্ড ফোরাম ২০২৫’-এ যৌথ অঙ্গীকার ঘোষণা করেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code