গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সভাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় হামলা, সংঘর্ষের ঘটনায় কারফিউ চলছে।
এরই মধ্যে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে চলছে অভিযান। সেই সঙ্গে নদীপথেও টহল জোরদার করেছে যৌথ বাহিনী।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতৃবৃন্দের উপর সংঘটিত হামলার প্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে দুষ্কৃতিকারীরা নদীপথ ব্যবহার করে যেন পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য গোপালগঞ্জ জেলার নদীপথে বিশেষ টহল পরিচালনা করছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও নৌ-বাহিনী।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত টহল চালিয়ে যাচ্ছে। সন্দেহভাজন নৌযানগুলোতে তল্লাশি, যাত্রী পরিচয় যাচাই ও সন্দেহভাজন গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী, যে কোনো ধরনের নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান অগ্রাধিকার।
উৎকণ্ঠার রাত পেরিয়ে থমথমে গোপালগঞ্জ, চলছে বিশেষ অভিযানউৎকণ্ঠার রাত পেরিয়ে থমথমে গোপালগঞ্জ, চলছে বিশেষ অভিযান
এর আগে বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হওয়ার খবর এসেছে।
এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে মঙ্গলবার থেকেই গোপালগঞ্জ শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। বুধবার সকালে এনসিপি নেতারা গাড়িবহর নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়।
পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতির মধ্যে বেলা দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে এসে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে তারা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে পুলিশ সুপার কার্যালয় ছাড়েন।
দুপুরে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সন্ধ্যায় কারফিউ জারির ঘোষণা আসে।