আজ সোমবার, ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত

editor
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত

Oplus_16908288

Sharing is caring!

আদালত প্রতিবেদকঃ
বৈষম‍্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
প্রসিকিউশনের পক্ষে সাক্ষ‍্যগ্রহণ করছেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা। জবানবন্দি শেষে তাদের জেরা করবেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
গত ৩ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ। ৪ আগস্ট সাক্ষ‍্য দেন পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও দিনমজুর চোখ হারানো পারভীন।
৬ আগস্ট প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রিনা মুর্মু ও সাংবাদিক একেএম মঈনুল হক। এরপর ১৭ আগস্ট চার জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন– সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম।
১৮ আগস্ট পঞ্চম দিনের মতো সাক্ষ্য দেন শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল ও রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন। তাদের জেরা করেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
২০ আগস্ট ষষ্ঠ দিনের সাক্ষ্য-জেরা শেষ হয়। ওই দিন দুজন চিকিৎসকসহ চার জন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন– ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ পারভীন, ইবনে সিনা হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসানুল বান্না ও শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের মা সোনিয়া জামাল।
২৪ আগস্ট সাক্ষ্য দেন তিন জন। তারা হলেন–রংপুর মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অফিস সহকারী মো. গিয়াস উদ্দিন, একই প্রতিষ্ঠানের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম ও কুষ্টিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম।
এরপর ২৫ আগস্ট পাঁচ জন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন– জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী, একই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা, শহীদ মারুফ হোসেনের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার ও শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের মা হোসনে আরা বেগম।
জবানবন্দিতে তারা সাবেক শেখ হাসিনা সাবেক, আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও ফাঁসি চেয়েছেন।
ফলে ট্রাইব্যুনালে এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলায় আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও আসামি হিসেবে রয়েছেন। এর মধ্যে নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন মামুন। বাকিরা এখনও পলাতক।
এদিকে, আজ সকালেও এ মামলার আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় তিন জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।