আজ বৃহস্পতিবার, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গ্যাস সংকটে হুমকির মুখে দেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাত : ঝুঁকিতে ৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ 

editor
প্রকাশিত মে ৬, ২০২৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ণ
গ্যাস সংকটে হুমকির মুখে দেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাত : ঝুঁকিতে ৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ 

Oplus_16908288

Sharing is caring!

Manual6 Ad Code
সিনিয়র রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের মূল চালিকা শক্তি টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত চরম সংকটে পড়েছে।
শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের সরবরাহ হঠাৎ কমে যাওয়ায় উৎপাদন ক্ষমতা নেমে এসেছে ৩০-৪০ শতাংশে। এতে প্রায় ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ।
গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ভূলতা, মাওনা ও টঙ্গীর মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাসের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় অনেক কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
গাজীপুরের ইসরাক স্পিনিং মিলস লিমিটেড বিগত এক সপ্তাহ ধরে অর্ধেকেরও কম উৎপাদন করছে। লিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, “গ্যাস না থাকায় প্রতিদিনের সুতা উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেক সময় শূন্য গ্যাস চাপ নিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।”
বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) তথ্য মতে, টেক্সটাইল ও নিটিং খাতে প্রতিদিন ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হলেও সরবরাহ মিলছে মাত্র ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।
প্রাথমিক টেক্সটাইল খাতে (স্পিনিং, উইভিং, ডাইং, ফিনিশিং ও প্রিন্টিং) ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প দেশের মোট রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ – বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালেও সরবরাহ বাড়েনি। দ্রুত এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না করলে বিপর্যয় অনিবার্য।”
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) জানিয়েছে, প্রতিটি ইউনিট প্রতিদিন গড়ে ২৫ লাখ টাকার লোকসান গুণছে। অ্যাসোসিয়েশনের আওতাভুক্ত প্রায় ৫০০ স্পিনিং মিলের মধ্যে অনেকেই উৎপাদন বন্ধের মুখে।
এ সংকট শুধু গ্যাস ঘাটতিই নয়। কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রেটের তারতম্য এবং সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্কের কারণে পশ্চিমা ক্রেতারা নতুন অর্ডার দিতে অনীহা দেখাচ্ছে। এতে স্থানীয় বাজারেও সুতার চাহিদা হ্রাস পেয়েছে।
টাকা-ডলারের বিনিময় হারের পতন – মাত্র দুই বছরে ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২২ টাকায় পৌঁছানো – উদ্যোক্তাদের কার্যকরী মূলধন সংকটে ফেলেছে।
শিল্পখাতের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই গ্যাস সংকট দ্রুত সমাধান না হলে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত ধ্বংসের মুখে পড়বে, লক্ষ লক্ষ শ্রমিক চাকরি হারাবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।
Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code