আজ বুধবার, ৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত

editor
প্রকাশিত আগস্ট ৫, ২০২৫, ০৫:৫২ পূর্বাহ্ণ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত

Oplus_16908288

Sharing is caring!

সিনিয়র প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ।
এ বিষয়ে শামীমা ইয়াছমিন বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানো কোনো অন্যায় নয় বরং এটি তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ। আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোকে আমি গর্বের বিষয় মনে করি।’
এ ঘটনায় স্থানীয় শিক্ষক সমাজ ও এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, অনেকেই এটিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ প্রধান শিক্ষিকাকে ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষিকার মোবাইলে যোগাযোগ করলে তার স্বামী মো. হাফিজুর রহমান ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেন, আপনার একটা চিঠি আছে, অফিসে এসে নিয়ে যাবেন। তবে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খোন্দকার জসিম আহমেদ জানান, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে স্কুলে তদন্ত চালিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় মামলা এবং স্থায়ী বহিষ্কারের ব্যবস্থাও হতে পারে।
জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিন বিদ্যালয়ের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলাব্যাপী উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার বিরোধিতা করলে প্রধান শিক্ষিকা সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে আমার পিতা মইনউদ্দীন মাস্টার মুক্তিযুদ্ধে করেছেন।
সেই যুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হত না। তাই আমার বিদ্যালয় থেকে এই ছবি সরাতে পারবো না।’
তবে পরে স্থানীয় চাপে ছবিটি নামাতে বাধ্য হন তিনি। এরপরেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিক তদন্তে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।