হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়, ‘কথায় কথায় হল ছাড়, হল কি তোর বাপ-দাদার।’
এর আগে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে কামাল রঞ্জিত মার্কেটে জড়ো হন। এ সময় বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় প্রোক্টরিয়াল বডির জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান তারা।
গত রোববার কম্বাইন্ড (বি.এসসি ইন ভেটেরিনারি ও এএইচ) ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলায় অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হন।
এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে। পরে রাত ৯টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু শিক্ষার্থীরা ওই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে স্লোগান দেন— ‘কথায় কথায় হল ছাড়, হল কি তোর বাপ-দাদার? আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরে, প্রশাসন কি করে?’
পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনে বহিরাগতদের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। হল কারো বাবার সম্পত্তি নয় যে বলবে ছেড়ে দিতে হবে। জীবন যাবে, তবুও হল ছাড়ব না।’
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী আহাদ বলেন, ‘আমরা যৌক্তিক বিষয়ে আন্দোলন করছি। অথচ শিক্ষকরা বহিরাগত এনে আমাদের ওপর হামলা করিয়েছে।
প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে টহল দিচ্ছে কেবল আমাদের কণ্ঠরোধের জন্য। যতক্ষণ না দাবি মানা হচ্ছে, আমরা হল ছাড়ব না।’
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এর আগে গত বছর জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে এমন রাতের নোটিশে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এবারও।
তাদের দাবি, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় নব্য স্বৈরাচারদের আবির্ভাব ঘটেছে বলেই রাতারাতি হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও কিছু ছাত্রী ও প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করেছেন, তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দেন, “জীবন যাবে, তবুও হল ছাড়ব না।
এর আগে রোববার রাত সাড়ে ১০টায় শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেন। এ সময় চার দফা দাবি জানান তারা।
দাবিগুলো হলো— একক ডিগ্রি, অর্থাৎ কেবল কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু রাখতে হবে; বহিরাগতদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করায় সম্পূর্ণ প্রক্টোরিয়াল বডিকে পদত্যাগ করতে হবে।
বহিরাগত দ্বারা ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ গ্রন্থাগার ও স্থাপনা ভাংচুর এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করার ঘটনায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।
যেসব শিক্ষক এ হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।