নিউইয়র্কে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে (৩৬) শোক, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষবিদায় জানিয়েছে হাজারো মানুষ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে পার্চেস্টার এলাকায় তার শেষযাত্রায় নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) তাকে গার্ড অব অনার দেয়। একই সঙ্গে মরণোত্তর পদোন্নতি দিয়ে ‘ডিটেকটিভ ফার্স্ট গ্রেড’ পদে উন্নীত করা হয় তাকে।
পার্কচেস্টার জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত জানাজায় কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অংশগ্রহণ করেন। দিদারুলের প্রতি সম্মান জানিয়ে এনওয়াইপিডি তাকে মরণোত্তর ‘ডিটেকটিভ ফার্স্ট গ্রেড’ পদে উন্নীত করে।
এনওয়াইপিডির কমিশনার জেসিকা টিশ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রদানকালে নিহত কর্মকর্তার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং দিদারুলের কর্তব্যপরায়ণতা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
৩৬ বছর বয়সী দিদারুল ইসলাম, যিনি ২০১৯ সালে এনওয়াইপিডিতে স্কুল সেফটি এজেন্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ২০২১ সালে পূর্ণাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার মর্যাদা লাভ করেন, সম্প্রতি ম্যানহাটনের একটি বহুতল ভবনে বন্দুকধারীর হামলা প্রতিহত করার সময় নিহত হন।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে তার পেশাগত সাহসিকতা এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রশংসা সর্বত্র প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
এনওয়াইপিডি’র ৪৭তম প্রিসিনক্টের কমান্ডিং অফিসার মোহাম্মদ আশরাফ দিদারুলের কমিউনিটির প্রতি গভীর নিষ্ঠা ও দায়বদ্ধতাকে ‘নম্রতা, স্থিরতা ও নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক’ হিসেবে অভিহিত করেন।
একইসঙ্গে পার্কচেস্টার কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও তাকে একজন নিবেদিতপ্রাণ নাগরিক, সহানুভূতিশীল বাবা এবং দায়িত্বশীল সহকর্মী হিসেবে স্মরণ করেন।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হোচুল তার বক্তব্যে দিদারুলের মৃত্যুকে ‘ব্যথার একটি ক্ষত’ হিসেবে অভিহিত করে, বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং তাদের প্রতি শহরের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সমর্থনের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, দিদারুল ইসলাম ছিলেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বাসিন্দা এবং যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে পুলিশ বিভাগে অসাধারণ পেশাগত দক্ষতা ও নিষ্ঠার উদাহরণ স্থাপন করেন।
তার মৃত্যু শুধু বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য নয়, পুরো নিউইয়র্ক নগরীর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্যও এক অপূরণীয় ক্ষতি।