পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে কারসাজি ও ঘুষ গ্রহণসহ একাধিক অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। যদিও নিজেই তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বুধবার (১৩ আগস্ট) প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৫২ বছর বয়সী কিম আদালতে চার ঘণ্টার শুনানিতে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। তবে সিউল আদালত প্রমাণ নষ্টের আশঙ্কায় তাকে রিমান্ডে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এটি প্রথমবার যে কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং তার স্ত্রী একই সময়ে কারাগারে বন্দি হলেন। কিমের স্বামী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলও বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
গত বছর ব্যর্থ সামরিক আইন প্রয়োগের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন ইউন সুক ইওল। এই ঘটনাটি দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করে এবং শেষ পর্যন্ত তার ক্ষমতা চলে যায়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কিম ডয়েচ মোটর্স নামক বিএমডব্লিউ ডিলারের শেয়ারমূল্য কারসাজির মাধ্যমে ৮০০ মিলিয়ন উওন (প্রায় ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪০ মার্কিন ডলার) অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।
যদিও এসব অভিযোগ তার স্বামী প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগের সময়ের, তবে দীর্ঘদিন এ নিয়ে তার স্বামীর সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ছিল।
অতিরিক্ত অভিযোগে বলা হয়, তিনি বিতর্কিত ইউনিফিকেশন চার্চ থেকে ব্যবসায়িক সুবিধা পাওয়ার বিনিময়ে দুটি শ্যানেল ব্যাগ ও একটি হীরার নেকলেস ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেন। এছাড়া ২০২২ সালের সংসদীয় উপনির্বাচন এবং গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের অভিযোগও রয়েছে।
বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার আদালতে কালো স্যুট ও স্কার্ট পরে গম্ভীর মুখে হাজির হন কিম। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নই, তবুও সমস্যার সৃষ্টি করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ইউন সুক ইওল বিরোধী দলের আনা বিশেষ কাউন্সেল বিল তিনবার ভেটো দেন। এর মধ্যে সর্বশেষ ভেটো দিয়েছিলেন গত বছরের নভেম্বরে, যা সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেয়ার এক সপ্তাহ আগে হয়।
চলতি বছরের জুনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী লি জে মিয়ং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিশেষ কাউন্সেল গঠন করা হয়।