আজ শুক্রবার, ২৪শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেনজির ও মতিউরের বিরুদ্ধে দুদকের ৬ মামলা

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৫:০২ অপরাহ্ণ

Sharing is caring!

Manual8 Ad Code

টাইমস নিউজ 

Manual2 Ad Code

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি)বেনজীর আহমেদ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান  এবং  তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আসামিদের বিরুদ্ধে ৮৫ কোটি ৩২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। বেনজীর-মতিউর ছাড়াও তাদের স্ত্রী-সন্তানদের আসামি করা হয়েছে। রোববার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।

Manual1 Ad Code

সংস্থার মহাপরিচালক আক্তার হোসেন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মোট চারটি মামলায় বেনজীর পরিবারের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

জানা গেছে, একটি মামলায় শুধু বেনজীর আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫১ টাকার অবৈধ সম্পদ এবং ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৯ হাজার ৬০ টাকার মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আরেক মামলায় আসামি করা হয়েছে- বেনজীর ও তার স্ত্রী জীসান মির্জাকে। জীসান মির্জার বিরুদ্ধে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার এ সম্পদ স্বামী বেনজীর আহমেদের অবৈধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। অপর মামলায় বেনজীর ও তার মেয়ে ফারহিন রিশতা বেনজীরকে আসামি করা হয়েছে। ফারহিনের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৭৫ লাখ ২৭৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পৃথক আরেকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে বেনজীর ও তার মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরকে। তার বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ও ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

Manual1 Ad Code

জানা গেছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে বেনজীর পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য নিশ্চিত হয় দুদক। এরপর গত ২৩ ও ২৬ মে দুদকের আবেদন আমলে নিয়ে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির শেয়ার জব্দের (ক্রোক) নির্দেশ দেন ঢাকা মেট্টোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। গত ২৬ মে বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। এগুলোর মধ্যে রাজধানীর গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট, সাভারের একটি জমি ছাড়াও মাদারীপুরের ১১৪টি দলিলের সম্পত্তি রয়েছে।

এর আগে এর আগে ২৩ মে ৮৩টি দলিলে ক্রয়কৃত সম্পত্তি ক্রোক করা হয়। সেই সঙ্গে ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও তার সিকিউরিটিজের (শেয়ার) টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

Manual2 Ad Code

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল বেনজীর, তার স্ত্রী জিসান মির্জা, দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ অনুসন্ধান টিম অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করে। টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন, সহকারী পরিচালক নিয়ামুল আহসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন।

এদিকে, মতিউর রহমান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১১ কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ১২০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে দুই মামলায়।

একটি মামলায় এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউরের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ২৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ও ১ কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ২১৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আরেক মামলায় মতিউরের সঙ্গে আসামি করা হয়েছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলীকে। শিবলীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ২ কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ও ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। মতিউর পরিবারের নামে-বেনামে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের তুলনায় এজাহারে আনা অভিযোগকৃত সম্পদের পরিমান অনেক কম বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ঈদুল আযহার আগে মোহাম্মদপুরের বিতর্কিত সাদিক এগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনেন ধানমন্ডির তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত। এই ছাগল কেনার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ইফাতের অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এরপরই দৃশ্যপটে আসে এনবিআর সদস্য মতিউর পরিবারের বিপুল সম্পদ। এ নিয়ে একের পর এক গণম্যাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সারাদেশে হৈচৈ পড়ে যায়। এনবিআর সদস্য মতিউর রহমান গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে রিফাত ছেলে তার নয় বলে দাবি করেন। কিন্তু মতিউর যে ওই ছেলের বাবা তার প্রমাণপত্র দিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সমালোচনার ঝড় উঠে। আত্মগোপন করে মতিউর ও পরিবারের সদস্যরা। কিছু দিন পর তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী উপজেলা পরিষদের সভায় যোগ দিয়ে তাদের আর কিছু হবে না বলে দম্ভোক্তিও করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলো দুদক। এর আগে মতিউর পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর বেশ কিছু সম্পদ-ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

 

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code