আজ সোমবার, ১৮ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৩ বছর কারাভোগের পর নতুন জীবনের পথে দুলাল জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে পেলেন মুদি দোকান ও পুনর্বাসন

editor
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০৪:০৮ অপরাহ্ণ
২৩ বছর কারাভোগের পর নতুন জীবনের পথে দুলাল জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে পেলেন মুদি দোকান ও পুনর্বাসন

Sharing is caring!

রহমতউল্লাহ আশিক,নওগাঁ:
মাত্র ২৫ বছর বয়সে আজীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন নওগাঁর বদলগাছীর দুলাল হোসেন। দীর্ঘ ২৩ বছরের কারাভোগ শেষে চলতি বছরের ২ জুলাই তিনি মুক্তি পান। কারাগারের গণ্ডি পেরিয়ে এবার নতুন জীবনের স্বপ্ন বুনছেন তিনি।
সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল তার হাতে তুলে দেন একটি মুদি দোকান। শুধু তাই নয়, পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে নগদ মূলধন এবং বসবাসের জন্য একটি ঘর দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে তাকে।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বালুভরা ইউনিয়নের বারাতৈল গ্রামের মৃত ইয়াকুব হোসেনের ছেলে দুলাল। সংসার জীবনে মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় স্ত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় তিনি হত্যা মামলার আসামি হন। সেই মামলাতেই ২০০২ সালে তার আজীবন সাজা হয়। রাজশাহী ও নওগাঁ জেলা কারাগারে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন তিনি। বন্দী জীবনে শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীল আচরণের কারণে অন্যদের দেখাশোনার দায়িত্বও পালন করতেন দুলাল। তবে মামলা চলাকালে উকিল খরচ ও অন্যান্য ব্যয়ে পরিবারের শেষ সম্বল জমিও বিক্রি হয়ে যায়। একসময় আর কেউ তাকে দেখতে আসতো না। কেবল মাঝে মাঝে মা আয়েশা কিছু টাকা দিয়ে যেতেন।
মুক্তির পর জীবনের পরবর্তী পথচলা নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন দুলাল। সমাজে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো কিছুই ছিল না তার। তাই বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে মুদি দোকানের আবদার জানান। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো।
দুলালের মা আয়েশা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমি ছেলেকে ফিরে পেয়ে অনেক খুশি। যদি তাকে একটা ঘর দেওয়া হয় তবে মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।
গ্রামবাসীও একই দাবি তুলেছেন। তাদের মতে, দীর্ঘ ২৩ বছর কারাভোগ শেষে মুক্ত দুলালের পাশে দাঁড়ানো জরুরি, যাতে তিনি সমাজে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, সমাজে প্রতিটি মানুষের সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার আছে। দুলালের ২৩ বছর জেলখানায় কেটে গেছে। তিনি যেন নতুন জীবনে স্বপ্ন গড়তে পারেন এবং আর কোনো অপরাধে জড়িয়ে না পড়েন, সে জন্যই সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।