মৌলভীবাজারে টিকটকে প্রেম অতঃপর দেখা করতে গিয়ে মেয়ের স্বজনেরা দিলেন বাল্য বিয়ে: থানায় মামলা।
টিকটকে কিশোর–কিশোরীর পরিচয়, এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা একটি রেস্তোরাঁয় দেখা করতে যায়। একপর্যায়ে মেয়ে (১৫) স্বজনেরা সেখানে হাজির হন। পরে তাদের বাড়ি নিয়ে যান। ছেলে (১৫) স্বজনদের না জানিয়েই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের উপস্থিতিতে তাদের বাল্যবিবাহ দেওয়া হয়।
ছেলেটির বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় আর মেয়েটির বাড়ি একই জেলার জুড়ী উপজেলায়। ছেলেটি কুলাউড়ার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণিতে পড়ে। মেয়েটি অষ্টম শ্রেণিতে পড়া ছাত্রী।
পরে ছেলের এক বন্ধুর কাছ থেকে বাল্য বিয়ের খবর পান তার স্বজনেরা। তাঁরা বিষয়টি থানায় জানান। এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে ছেলের মা বাদী হয়ে জুড়ী থানায় মামলা করেন। মামলার পর শনিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই কিশোর–কিশোরীকে উদ্ধার করে। রবিবার (৭ই সেপ্টেম্বর) ওই কিশোর–কিশোরীকে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহারের সূত্রে বাদী বলেন, গত শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ছেলের সন্ধান পাচ্ছিলেন না। তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। ওই দিন রাতে ছেলের এক বন্ধু মুঠোফোনে তাঁদের জানায় তাকে সঙ্গে নিয়ে জুড়ী উপজেলা সদরের একটি রেস্তোরাঁয় মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। পরে মেয়ের স্বজনেরা সেখানে গিয়ে তাদের জোর করে বাড়ি নিয়ে যান। সেখানে ওই এলাকার ইউপি সদস্যের উদ্যোগে এক ইমাম দিয়ে ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দেন। মুঠোফোনে ধারণ করা এসব ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সে ছেলের স্বজনদের কাছে পাঠায়।
শনিবার রাত ১১টার দিকে জুড়ীর জায়ফরনগর ইউনিয়নে মেয়েটির এক আত্মীয়ের বাড়িতে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। সেখান থেকে ছেলে ও মেয়েকে উদ্ধার করে জুড়ী থানায় নেওয়া হয়। রাতেই ছেলের মা বাদী হয়ে মেয়ের বাবা, মা ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ও বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে মামলা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে স্থানীয় ইউপি সদস্য শরফ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে জুড়ী থানার ওসি মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় ছেলের মা বাদী হয়ে মামলা দায়েরের পর শনিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই কিশোর–কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকালে ওই কিশোর–কিশোরীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালত তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন। আসামিরা পলাতক। থানা পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।