আজ বুধবার, ২৭শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসমুদ্র : সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ শুরু

editor
প্রকাশিত জুলাই ১৯, ২০২৫, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসমুদ্র : সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ শুরু

Oplus_16908288

Sharing is caring!

সিনিয়র রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
‘জাতীয় সমাবেশ ২০২৫’ শীর্ষক এই কর্মসূচিকে ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই ঢাকামুখী মিছিল আর স্লোগানে উদ্যানজুড়ে সৃষ্টি হয় জনসমুদ্রের।
সমাবেশের মূল কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে দুপুর ২টা থেকে। তবে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাবেশের সূচনা হয়। সাইফুল্লাহ মানসুরের উপস্থাপনায় সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনায় জমে ওঠে প্রথম পর্ব। এরপর একে একে বিভিন্ন বিভাগের সাংস্কৃতিক দল অংশ নেয় আয়োজনে।
মঞ্চ নির্মাণ, অতিথিদের আসন, মাইক, এলইডি স্ক্রিনসহ অন্যান্য লজিস্টিক প্রস্তুতি মধ্যরাতেই সম্পন্ন হয়। পুরো উদ্যানজুড়ে বসানো হয় জামায়াতের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’। মঞ্চে টানানো ব্যানারে লেখা ‘জাতীয় সমাবেশ ২০২৫’।
লাল কার্পেট ও অস্থায়ী ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হয় অতিথি ও শহীদ পরিবার সদস্যদের জন্য আসন। মূল মঞ্চের আশপাশে রাখা হয় জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার, প্রবাসী প্রতিনিধিসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য আসন।
সারাদেশ থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই ঢাকায় এসে পৌঁছাতে শুরু করেন। মিছিলের পর মিছিল আসতে থাকে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, হাইকোর্ট, পলাশী ও টিএসসি হয়ে উদ্যানে।
প্রতিটি মিছিলে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা বহন করতে দেখা গেছে। কেউ জাতীয় পতাকা, কেউবা দলীয় মনোগ্রাম খচিত গেঞ্জি ও পাঞ্জাবি পরে অংশ নিচ্ছেন।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থেকে আসা সোহেল হাসান জানান, তাদের উপজেলা থেকেই ৪০টি বাসে করে প্রায় ৩০ হাজার কর্মী ঢাকায় এসেছেন।
 সিরাজগঞ্জ থেকে আসা এরশাদ আলীর ভাষ্য, ট্রেন ও বাসে করে তাঁদের জেলা থেকেও ৩০-৪০ হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। অনেকে আগের রাতেই উদ্যানের আশপাশে অবস্থান নেন।
নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। হাইকোর্ট, মৎস্যভবন, শাহবাগসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে তারা ভোর থেকেই বিভিন্ন গেটে আগত নেতাকর্মীদের গাইড করছেন।
সমাবেশস্থলে বসানো হয়েছে ৩৩টি এলইডি স্ক্রিন, ৩০০ মাইক, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, মেডিকেল বুথ ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা। আগতদের জন্য খাবার পানির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
এদিন দুপুরে জামায়াতের নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, “এই সমাবেশে আমাদের দাবিগুলো জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। ইনশাল্লাহ স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম হবে এখানে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকতেই বোঝা যায়, মানুষ কতটা আগ্রহ নিয়ে এসেছে।”
সমাবেশের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।
আগে বায়তুল মোকাররম বা পল্টন এলাকায় সীমিত পরিসরে কর্মসূচি করলেও এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থনের বার্তা দিতে চায় দলটি।
নেতাদের আশা, এই মহাসমাবেশ একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হয়ে থাকবে আগামি নির্বাচন ও জাতীয় রাজনীতির জন্য।