আজ বৃহস্পতিবার, ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনে ‘গণভোট’ চেয়েছে ইসলামী আন্দোলন

editor
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনে ‘গণভোট’ চেয়েছে ইসলামী আন্দোলন

Oplus_16908288

Sharing is caring!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে করার দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। প্রয়োজনে জনগণের মতামত নিতে এর আগে গণভোট আয়োজনের কথা বলেছে দলটি।
মঙ্গলবার (২রা সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার বাসভবন যমুনায় আরও সাত রাজনৈতিক দল ও একটি ইসলামি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের এমন দাবি তুলে ধরার কথা বলেছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ।
দেড় ঘণ্টার এ বৈঠক শেষে যমুনার সামনে বিফ্রিংয়ে এসে তিনি পিআর পদ্ধতিতে (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে) নির্বাচন আয়োজনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার কথা তুলে ধরেন।
পিআর নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা কী বলেছেন- এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনারা নোট রেখেছেন। উনারা বলেছেন চিন্তাভাবনা করবেন।
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা হওয়ার কথা তুলে ধরে আশরাফ আলী বলেন, আমরা বলেছি, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাইনি।
বিফ্রিংয়ে দলগুলোর প্রতিনিধিরা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এদিনের আলোচনায় নির্বাচন, নির্বাচনের পরিবেশ, আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে কথা হয়েছে।
এদিন সাতটি রাজনৈতিক দল- এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় গণফ্রন্ট এবং কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে নির্বাচন ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা জানায় প্রধান উপদেষ্টা দপ্তর। এর অংশ হিসেবে রোববার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বলছে, নির্বাচনের আগে হতে হবে বিচার ও সংস্কার। সংস্কার ও বিচার ছাড়া সুষ্ঠু সঠিক নির্বাচন হবে না, আবার পিআর পদ্ধতি ছাড়া শতভাগ জনমতের প্রতিফলন ঘটবে না।
আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে আয়োজনে প্রয়োজনে সরকারকে গণভোটের ডাক দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে দলটি।
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ বলেন, দেশ ও জাতি এই মুহূর্তে একটা ক্রান্তিলগ্নে। আমরা প্রথমে উপদেষ্টামণ্ডলীকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। বিশেষ করে দেশের ৫৩ বছরে যে রাজনৈতিক জঞ্জাল, গণতন্ত্র হত্যা, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার বিষয়টা ঐকমত্য কমিশনে জুলাই সনদের ভূমিকায় রাখা হয়েছে।
 স্বাধীনতার পর যে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় ছিল তারা কেউই গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে পারেনি। জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, গত ৫৩ বছরের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় নাই, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার হয় নাই, জনমতের শতভাগ প্রতিফলন ঘটেনি, যে ধারার জন্য এতো লড়াই, সংগ্রাম, সেই ধারায় যদি আবার আগামী নির্বাচন করেন তাহলে এটা আবারও লিখতে হবে আপনাদের ৫৩ বছর হয় নাই, আগামী ৫ বছরেও হবে না।
আশরাফ আলী আকন বলেন, গতানুগতির পদ্ধতিতে জাতির কোনো পরিবর্তন হবে না। ৩১টি দলের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনে ২৬টি দল পিআরের পক্ষে মত দিয়েছি।
এই দলগুলোর পক্ষ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে খোলামেলা বলা হয়েছে, দেশের দুর্নীতি সন্ত্রাস, মাদক, মব, ভোট ডাকাতি, ভোট চুরি, বাক্স ছিনতাই, দিনের ভোট রাতে হওয়া, এককভাবে নির্বাচন করা, ডামি প্রার্থী দেয়া, এসবের বিপক্ষে প্রয়োজন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন।
পৃথিবীর ৯১টা দেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আছে উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলনের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, জনমতের প্রতিফলনের পদ্ধতি হচ্ছে পিআর। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, পিআর পদ্ধতি বিবেচনা করেন।
 যদি আগামী নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি দিতে না পারেন তাহলে একটা গণভোট দেন। জনগণই ঠিক করুক।
আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বলেছি, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছি। কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাইনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যুগ্মমহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।