আজ মঙ্গলবার, ৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে সরবরাহ বাড়াতে আদানির কাছে আরও বিদ্যুৎ চায় সরকার

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ
অবশেষে  সরবরাহ বাড়াতে আদানির কাছে আরও বিদ্যুৎ চায় সরকার

Sharing is caring!

টাইমস নিউজ

আদানি পাওয়ারকে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ১,৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ সরবরাহ পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কম সরবরাহের কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) এক কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে করা ২৫ বছরের চুক্তির আওতায় আদানি পাওয়ার বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। তবে অক্টোবরের শেষ থেকে সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি, যার কারণ ছিল শীতকালীন কম চাহিদা ও বিল পরিশোধ সংক্রান্ত জটিলতা।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম জানান, আমাদের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী আদানি তাদের দ্বিতীয় ইউনিটটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করেছিল, তবে উচ্চ কম্পনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে ইউনিটটি পুনরায় চালু করা যায়নি।

বিপিডিবি জানিয়েছে, তারা প্রতি মাসে আদানিকে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছে এবং বকেয়া কমানোর চেষ্টা করছে। আদানির সঙ্গে আর কোনো সমস্য নেই।

যদিও ডিসেম্বর মাসে আদানি জানিয়েছিল, বিপিডিবির কাছে তাদের পাওনা প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার, কিন্তু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ওই সময় বলেছিলেন পাওনার পরিমাণ ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের মতো।

এই বিদ্যুৎ চুক্তির মূল বিতর্কটি মূলত মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে। চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম নির্ধারিত হয় দুটি সূচকের গড়ের ভিত্তিতে, যা অন্যান্য ভারতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের তুলনায় বাংলাদেশকে ৫৫% বেশি দাম পরিশোধ করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এদিকে, বাংলাদেশ আদালত আদানির সঙ্গে চুক্তির শর্ত পর্যালোচনা করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি গঠন করেছে, যা চলতি মাসের মধ্যেই তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবে। এই পর্যালোচনার ভিত্তিতে চুক্তির শর্ত পুনর্নির্ধারণের সম্ভাবনা রয়েছে।

২০২৪ সালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আদানির বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে, যেখানে বলা হয় যে আদানি তাদের ঝাড়খণ্ড প্রকল্পের জন্য ভারতের কাছ থেকে কর-সুবিধা পেলেও তা বাংলাদেশকে স্থানান্তর করেনি।

এদিকে, গত নভেম্বরে মার্কিন প্রসিকিউটররা আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি ও সাতজন নির্বাহীকে ভারতের ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। যদিও আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার আমলে স্বাক্ষরিত বড় বড় জ্বালানি চুক্তিগুলোর পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে, যা আদানির সঙ্গে করা চুক্তিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।