এবার নতুন ও তরুণদের নিয়ে আলোচনা থেমে নেই রাজশাহী-৫ । এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং-তদবিরের পাশাপাশি গণসংযোগ চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
ইতোমধ্যে প্রার্থী বাছাইয়ে জনমত জরিপের কাজও শুরু করেছে দলটি। এসব জরিপে ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের দুর্দিনে যারা মনোনয়ন পেয়েছিলো তাদের মধ্যেই প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ধরে রাখার চিত্র উঠে আসছে বলে জানা যাচ্ছে।
ঠিক তেমনি রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া দুর্গাপুর) আসনে ২০০৮ ও ১৮ সালের কান্ডারী ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী ও পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মন্ডলকে আসন্ন নির্বাচনেও ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান পুঠিয়া দুর্গাপুর জনসাধারণের একটি অংশ। নজরুল ইসলাম মন্ডল পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা কালিন তিনি উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষের সমস্যার সমাধানসহ বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজ করেছেন। তাই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে পুঠিয়া দুর্গাপুরবাসির ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে তৃনমুল ভোটারদের দাবি।
তবে তরুণ ও নতুন ভোটারদের চাওয়া ছাত্র রাজনীতি থেকে যারা রাজনীতির সাথে জড়িত সেসব ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দিবে এমন টাই দাবি বিএনপির নেতাকর্মীদের। তাই এমন সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় মানুষের নজরে আসার জন্য চোষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ করছেন জনসংযোগ। তাই এমন প্রার্থীকে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত দিলে সবার থেকে এগিয়ে থাকবে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবু বকর সিদ্দিক।
আরও আলোচনায় রয়েছেন সবার পরিচিত মুখ মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও বিএনপির মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য মাহমুদা হাবিবা। এবং তরুণ নেতা দুইবারের সাবেক প্রয়াত এমপি এ্যাডঃ নাদিম মোস্তফার সুযোগ্য সন্তান জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময় তার বাবার জনপ্রিয়তার কারনেই তিনিও রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে।
এছাড়াও জনপ্রিয়তায় রয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ও পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ইসফা খায়রুল হক শিমুল, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক আব্দুস সাত্তার, রাজশাহী জেলা শ্রমীক দলের সভাপতি রোকুনজ্জামান আলম, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফাও রয়েছেন আসন্ন সংসদ সদস্য নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী।
বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, প্রার্থী বাছাই, নির্বাচনি ইশতেহার ও নির্বাচনি জোট- এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি। প্রার্থী মনোনয়নে প্রাধান্য পাবে নির্যাতিত, ত্যাগী, সৎ ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতারা। প্রার্থী বাছাইয়ে এলাকায় জনপ্রিয়তা ও জনমত জরিপের ফলাফলকে এবার গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
নজরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, পুঠিয়ায় বিএনপির প্রতিষ্টা লগ্ন থেকে আমি আছি। বিএনপির বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে থেকে দলকে সুসংগঠিত করেছি। পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা কালিন আমি ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ২০০৮ ও ১৮ সালে দলের দুর্দিনে কেন্দ্র আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। পুঠিয়া দুর্গাপুরে জনগণের ভালো সারা পাচ্ছি আমি আশা করি সামনের নির্বাচনেও দল আমাকে মনোনয়ন দেবে ।
আবু বকর সিদ্দিক বলেন, রাজশাহী কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে থেকে দীর্ঘ প্রায় ২৭ বছর সুনামের সাথে ছাত্র রাজনীতি করেছি। নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে জীবন বাজী রেখে আন্দোলন করেছি।আন্দোলন করতে গিয়ে বহুবার কারা বরন করেছি। আমার নির্বাচনী এলাকা পুঠিয়া-দুর্গাপুর উপজেলায় সংগঠনকে গতিশীল করতে নিরলস কাজ করে আসছি বলে মানুষও আমাকে গ্রহন করেছে। মানুষের কল্যানে কাজ করতে হলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্ব হওয়া দরকার। সে কারনেই আমি ধানের শীষের মনোনয়ন চাই। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন আন্দোলনে যারা ছিলো, যাদের মধ্যে পরিচ্ছন্ন ইমেজ ও দলের প্রতি কমিটমেন্ট আছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে যার গ্রহনযোগ্যতা আছে তেমন নেতাকে আগামী নির্বাচনে দলের নমিনেশন দেয়া হবে। সেই হিসাবে দলের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমি নিজেকে তৈরী করেছি।
মাহমুদা হাবিবা বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের মতো রাজশাহী-৫ আসনেও জাতীয় নির্বাচনমুখি হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
এই আসনে আরো অনেকের মতো আমিও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। মনে রাখতে হবে যে, ৫ই আগস্ট’২৪ পরবর্তী ভোটারদের চিন্তা ভাবনায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। রাজনীতিতে এসেছে গুণগত পরিবর্তন। ত্যাগী এবং ক্লিন ইমেজের নেতা, যারা একইসাথে এই নতুন সময়কে ধারণ করতে সক্ষম এবং মর্যাদার সাথে দলের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন, তারাই এগিয়ে থাকবেন মনোনয়নের দৌড়ে।
আমি বিশ্বাস করি যে এইসব বিবেচনায় আমি একজন যোগ্য প্রার্থী এবং আমার দল নি:সন্দেহে আমাকেই বেছে নিবে।
ইসফা খায়রুল হক শিমুল বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে আছি। বিএনপির এমপি থাকা কালিন ও ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনসহ সকল নেতাদের মামলার দিক গুলো আমি জনসাধারণের পাশে থেকে মোকাবেলা করে জামিনের ব্যবস্থা করেছি। যা সেই সময়ের বিএনপির এমপিও করেনি। এবং বিএনপিকে সুসংগঠিত করার জন্য যা যা করার দরকার আমি তা করছি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তার প্রতিশ্রুতির ৩১ দফা বাস্তবের জন্য আমি মাঠে সবসময় আছি এবং থাকবো। জনগন আমার সাথে আছে আমি আশা করছি দল মনোনয়ন আমাকে মনোনয়ন দেবে।
জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময় বলেন, আপনারা দেখছেন দলকে সুসংগঠিত করার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমার বাবা দুইবার এমপি থাকা অবস্থায় পুঠিয়া দুর্গাপুরের উন্নয়ন করে তিনি যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তা কিন্তু এখনও কমেনি সেটা কেন্দ্র পর্যন্ত জানে। তাই আমি তার সন্তান হিসেবে জনগণ আমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চাচ্ছে। আমি আশাবাদী কেন্দ্র আমাকে মনোনয়ন দেবে।
আব্দুস সাত্তার বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমি দুর্গাপুর-পুঠিয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে দলকে শক্তিশালী করেছি। ৩১ দফা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে লিফলেট বিতরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে কাজ করে চলেছি। এছাড়াও এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাস্তাঘাট সংস্কার, টিউবওয়েল ও সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপন করে খাবার পানির ব্যবস্থা করা, অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসায় সহযোগীতা, কন্যা দায়গ্রস্থ পিতাকে সহায়তা, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, অসচ্ছল পরিবারের ছাত্র ছাত্রীদের ভর্তি ফি, মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের জামাকাপড় প্রদান, মসজিদ ও মাদ্রাসার নির্মানে ও উন্নয়নে সহায়তা প্রদান ইত্যাদি জনকল্যাণ মূলক কাজগুলো করে যাচ্ছি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী বিরোধী আন্দোলনে ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতাকর্মীদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছি। আমার প্রাণের সংগঠন বিএনপি আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবো বলে আমি আশাবাদী।