আজ বৃহস্পতিবার, ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নাগরপুরের পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি 

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১১, ২০২৪, ০২:০৪ অপরাহ্ণ
কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নাগরপুরের পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি 

Sharing is caring!

এম.এ.মান্নান,নাগরপুর(টাংগাইল)সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইল সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে নাগরপুর উপজেলার লৌহজং নদীর তীরে ১৫ একর জায়গা জুড়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িঁয়ে আছে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি।
জমিদার বাড়িতে ঢুকতেই চোখে পড়ে পুরানো মন্দির। লোকমুখে শোনা যায় এমন শরৎ দিনে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন ভারতবর্ষের নামকরা প্রতিমা কারিগরেরা। কালের বিবর্তনে জায়গাটা এখন নির্জন, নেই আগের সেই গৌরব আভিজাত্যের ছাপ, নেই প্রতিমা তৈরির কোনো ব্যস্ততা।
মন্দিরের পেছনে বিশাল তিনটি মহল যা সেকালে তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল। মহলগুলোর আলাদা কোনো নাম পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বড় মহলে বর্তমান পাকুটিয়া বিসিআরজি ডিগ্রী কলেজ পরিচালিত হচ্ছে।
দ্বিতল বিশিষ্ট ভবনের নির্মাণ শৈলী মুগ্ধ করবে সবাইকে। তবে সংস্কারের অভাবে ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।তারপাশেই অপূর্ব লতাপাতার কারুকার্য খচিত বিশাল আরেকটি  ভবন, যার মাথায় মূয়রের মূর্তি রয়েছে।
লতাপতায় আছন্ন ভবনটির একাংশ বর্তমানে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং আরেক অংশে  একটি বেসরকারি দাতব্য সেবা সংস্থা পরিচালিত হচ্ছে। এই ভবনের পিলারের মাথায় এবং দেওয়ালেও অসাধারণ নকশা দেখা য়ায়।
জমিদার বাড়ির পেছনে একটি দীঘি রয়েছে আর আছে দুইটি পরিত্যক্ত কুপ। একটি প্রাচীর ঘেরা ভাঙা বড় কূপের দেখা মিলে যেখানে সেকালের জমিদার গিন্নিরা স্নান করতেন। এছাড়া জমিদার বাড়ির বিশাল মাঠের এক কোণে নাট মন্দির রয়েছে। এক সময় নাচে, গানে মুখর থাকত এই নাট মন্দির।
জানা যায়, নাগরপুরের সাথে কলকাতার একটি বানিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর তার প্রেক্ষিতেই পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে আসেন ধনাঢ্য ব্যক্তি রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডল।
রামকৃষ্ণ সাহাই ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটিশদের কাছ থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে জায়গায় ক্রয় করে জমিদারী শুরু করেন।
পরবর্তীতে রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডলের দুই ছেলে বৃন্দাবন ও রাধা গোবিন্দ এবং তারপর বৃন্দাবন চন্দ্রের তিন ছেলে- ব্রজেন্দ্র মোহন, উপেন্দ্র মোহন এবং যোগেন্দ্র মোহন দীর্ঘকাল রাজত্ব করেন।এই তিন ভাইয়ের তিনটি মহলই তিন তরফে বিভক্ত। জমিদাররা সবাই ছিলেন প্রজানন্দিত।
জমিদার বাড়িটি সংস্কার বা জমিদারদের ইতিহাস সংরক্ষণ না হওয়াতে একদিকে যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে বাড়িটি অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে এর ইতিহাস।
৬০ বছরের এক ব্যক্তি বলেন পাকুটিয়া জমিদার বাড়িগুলো অতিসত্বর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন ভুক্ত করে সংস্কার সাধন করা উচিত এবং একটি পর্যটন এরিয়া করা উচিত। তা নাহলে অতিসত্বর ভেঙ্গেচুরে নষ্ট হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে এই বাড়ি গুলার চিহ্নও খুঁজে পাওয়া যাবে না।