আজ বুধবার, ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিউ মার্কেট থেকে দেওয়া হতো অস্ত্র ভাড়া ও ফ্রি হোম ডেলিভারি

editor
প্রকাশিত আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৯:১৫ পূর্বাহ্ণ
নিউ মার্কেট থেকে দেওয়া হতো অস্ত্র ভাড়া ও ফ্রি হোম ডেলিভারি

Oplus_16908288

Sharing is caring!

সিনিযর প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড়। কিন্তু এই কোলাহলের আড়ালে চলছিল এক ভয়ঙ্কর ব্যবসা—দেশীয় ধারালো অস্ত্রের অবৈধ বেচাকেনা।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য এসব অস্ত্র ভাড়া ও বিক্রি করা হতো, এমনকি ফ্রি হোম ডেলিভারিও ছিল সেবার অংশ।
শনিবার (৯ আগস্ট) দিনভর সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে উন্মোচিত হয় এই চক্রের গোপন আস্তানা। তিনটি দোকান ও সংশ্লিষ্ট গুদাম ঘেঁটে পাওয়া যায় ১১০০’র বেশি ধারালো অস্ত্র—যার মধ্যে আছে সামুরাই চাপাতি থেকে শুরু করে নানা ধরনের ছুরি।
অভিযানে আটক হয় ৯ জন, যারা প্রাথমিকভাবে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
রাতে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ আর্মি ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম আহমেদ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ঢাকায় কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া সামুরাই ছুরির সূত্র ধরে জানা যায়, নিউ মার্কেট এলাকা থেকে এসব অস্ত্র বিক্রি ও ভাড়া দেওয়া হতো।
দোকানের সামনের অংশে সাধারণ পণ্য বিক্রি হলেও, গোপনে গুদামে অস্ত্র মজুত রাখা হতো এবং কুরিয়ারের মাধ্যমে সরাসরি কিশোর গ্যাংদের কাছে সরবরাহ করা হতো।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম জানান, দুই দিনের ধারাবাহিক অভিযানে নিউ মার্কেটের একাধিক দোকান ও গুদাম থেকে ১১০০’র বেশি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো কোনো গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত হয় না, বরং গত কয়েক মাসে একাধিক হত্যা, আহত, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “এ পর্যন্ত ৩০৬টি আগ্নেয়াস্ত্র, প্রায় ৮২১৫ রাউন্ড গুলি এবং ৫৩৮টি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে বিভিন্ন থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আদাবর, শেরেবাংলা নগর ও মোহাম্মদপুর থেকে ৮১৮ জন সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও দুষ্কৃতকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
উদ্ধার হওয়া অস্ত্র গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অপরাধীদের কোনো যোগসাজশ আছে কি না, তা যাচাইয়ে তদন্ত চলছে। সেনাবাহিনী ব্যবসায়ী সমাজকে বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব ধারালো অস্ত্র বিক্রি না করতে সতর্ক করেছে।