আজ রবিবার, ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে কোটি টাকার শিশু পার্কে এখন শুধু বন-জঙ্গল; এক বছরের মধ্যেই অবহেলায় পড়ে নষ্ট হচ্ছে রাইড-খেলনা

editor
প্রকাশিত আগস্ট ২০, ২০২৫, ০২:৪৫ অপরাহ্ণ
কালীগঞ্জে কোটি টাকার শিশু পার্কে এখন শুধু বন-জঙ্গল; এক বছরের মধ্যেই অবহেলায় পড়ে নষ্ট হচ্ছে রাইড-খেলনা

Sharing is caring!

Manual7 Ad Code

তৈয়বুর রহমান(কালীগঞ্জ) গাজীপুর:

গাজীপুরের কালীগঞ্জ শহরে শিশুদের বিনোদনের জন্য প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একমাত্র শিশু পার্ক আজ অবহেলায় পরিণত হয়েছে বন-জঙ্গলে। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ২০২৩ সালে নির্মিত এ পার্কটি উদ্বোধনের পরও চালু হয়নি। ফলে সম্ভাবনার পার্কটি এখন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অযত্নে।

কালীগঞ্জ উপজেলা রাজধানী ঢাকার অদূরে হলেও দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের বিনোদনের কোনো সুযোগ ছিল না। সেই শূন্যতা পূরণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে দরিসোম গ্রামে সরকারি খাদ্যগুদাম সংলগ্ন খাস জমিতে নির্মিত হয় ‘কালীগঞ্জ উপজেলা শিশুপার্ক’। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আজিজুর রহমানের পরিকল্পনায় গড়ে ওঠা এ পার্কটি ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী শফিকুল আলম। কিন্তু ইউএনও বদলির পর আর তদারকি হয়নি পার্কটির। রাজনৈতিক পরিবর্তনের অস্থিরতার মধ্যেই থমকে যায় পার্ক পরিচালনার উদ্যোগ।

Manual6 Ad Code

শিশু পার্কে বসানো হয়েছিল স্লিপার, দোলনা, বিভিন্ন রাইড, বসার স্থান, বেঞ্চ, টিকিট কাউন্টার, ‘গ্রীন-গ্রেস’ নামে একটি শপ হাউজ, এমনকি ঘোড়া ও মুরগির ভাস্কর্যও। কিন্তু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এসব খেলনা ও সরঞ্জাম এখন অকেজো। শিশুদের খেলার সামগ্রী মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে।

Manual1 Ad Code

সরকারি হিসাবে, পার্ক নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৭৭ লাখ ৬০ হাজার ৪১১ টাকা, যা তিন দফায় খরচ করা হয়। এরমধ্যে ১ম দফায় ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার ৪২৭ টাকা, ২য় দফায় ২৯ লাখ ২৪ হাজার ৪৮৪ টাকা এবং ৩য় দফায় ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা।

Manual4 Ad Code

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের অদূরে থাকা এ পার্কের বেহাল দশা সবার চোখে পড়লেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, “প্রশাসন কি এ অবস্থাটা দেখছে না, নাকি না দেখার ভান করছে? আমরা চাই দ্রুত পার্কটি পরিষ্কার করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।”

পার্কের ব্যয় সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল জানান, “আমি মোট ব্যয় ছাড়া অন্য কোনো তথ্য দিতে পারবো না। অতিরিক্ত তথ্য চাইলে আপনাকে তথ্য অধিকার ফর্মে আবেদন করতে হবে।”

Manual6 Ad Code

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন,“শিশুপার্কটি এখন প্রায় বন-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে একজন ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা করছি, কিন্তু এখনো কাউকে পাওয়া যায়নি। আশা করছি শিগগিরই নিয়োগ সম্ভব হবে, তখন পার্কটি সুষ্ঠুভাবে চালু করা যাবে।”

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code