Sharing is caring!
মোহাম্মদ কামরুজ্জামান হিমু:
জমি নামজারি জারিতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ আমাদের চোখে পড়ার মতন। বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার পরেও মাঠ প্রশাসনে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন না থাকার কারণে বাধা সম্মুখীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে জনদুর্ভোগ বেড়ে চলছে, হতাশায় ভূমিসেবা নিতে আসা জনগণ ।
এখনো ঢাকা বিভিন্ন রাজস্ব সার্কেলে নামজারি করতে এসে নানা সমস্যা চোখে পড়ার মত। বেশ কয়েকটি রাজস্ব সার্কেল অফিস ঘুরে বিভিন্ন সমস্যা কলমের ডগায় চলে আসলো।
এক টুকরো জমির স্বপ্নকে কে না দেখে? ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা আমিনবাজার রাজস্ব সার্কেলের অধীনস্থ ভোমকা এলাকার হারুনুর রশিদ একটু জমি কিনেছিলেন পরিবার সকলকে নিয়ে বসবাস করবেন। উক্ত দাগ নাম্বার ৫২ খতিয়ান ১৫১ জমির পরিমাণ খুবই কম মাএ ৩ শতাংশ প্রায়। যার দলিল নং ১২৭২৬ তারিখ ৩০.৬.২০২৪ তার স্বপ্ন যেন ভেঙে যাচ্ছে নামজারি না করতে পেরে। জমিটি রেজিস্ট্রি করার আগে যার থেকে কিনেছিলেন তিনি ভূমি উন্নয়ন কর ২৬শে ২০২৪ অর্থবছর পর্যন্ত পরিশোধ করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আর এস নামজারি রয়েছে বর্তমান মাঠ জরিপে বিডিএস ও খতিয়ান নং ৪৯৭ কার্যক্রম চলমান। কিন্তু তিনি নামজারি করতে যেয়ে নানা ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন। তার অতীতে নামজারি রয়েছে । আবেদন করার পরেও কানুনগো জানিয়ে দেন C.W অর্থাৎ কোর্ড অব ওয়ার্ডস।
আরো জানা যায় কোর্ট অব ওয়ার্ডস দাগে অতীতে নামজারি হয়েছে এসিল্যান্ডারা সরকারী স্বার্থ রেখে নামজারি করেছেন। কিন্তু বর্তমানে দাগেও কোন নামজারি হবে না । এতে করে জনগণের মনে একটা আতঙ্ক বিরাজ করছেন হতাশায় অনেকে এসিল্যান্ড অফিস থেকে ফিরেছেন নিরাশ হয়ে।
কোর্ট অব ওয়ার্ডস জমি রক্ষণা করার দায়িত্ব ভূমি সংস্কার বোর্ডের। ভূমি সংস্কার বোর্ডের কাছে সুনির্দিষ্ট তালিকা, দাগ, মৌজার পুরো তথ্য রয়েছে কিন্তু এসিল্যান্ড অফিসে ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অনেক তথ্যই অজানা।
তেমনি ভাবে বড় কাকর মৌজায় বেশির ভাগ লোকের ভূ সম্পত্তি রয়েছে। উক্ত সম্পত্তি পৈতৃক উত্তরাধিকার, ওয়ারিশ মূলে প্রাপ্ত হওয়ায় সত্বেও সম্পত্তি হস্তান্তর বর্তমানে ব্যাপক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তফসিলভুক্ত ভু সম্পত্তি একটি দাগে মোট জমির পরিমাণ আংশিক কোর্ট অব ওয়ার্ডসভুক্ত হওয়ায় সহকারি কমিশনের ভূমি সাভার, আমিনবাজার, ও আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেল কোর্ড অব ওয়ার্ডস দাগ সহ ব্যক্তি মালিকানা জমিগুলো নামজারি জমা ভাগ কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রেখেছেন।
কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে ভূমি উন্নয়ন কর আবার চলমান ।
এতে করে জনগণ ভূমি মন্ত্রণালয় উপর আস্তা কমে যাচ্ছে।
অপরদিকে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন না থাকার কারণে উক্ত জমি নামজারি আবেদন করলেও মনজুর হওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। কোর্ড অব ওয়ার্ডস নামজারি ভোগান্তির নানাবিধ কারন উঠে এসেছে অনুসন্ধানে।
১) একটি দাগের মোট জমির পরিমাণ মাঝে আংশিক জমির পরিমাণ কোর্ট অব ওয়ার্ডস ভুক্ত হলে উক্ত দাগের অবশিষ্ট জমি কিভাবে নামজারি করা হবে এই বিষয়ে স্পষ্ট গাইডলাইন ও নির্দেশিকা এসিল্যান্ডে কাছে নেই।
২) একটি নির্দিষ্ট দাগ বা খতিয়ানভুক্ত জমির পরিমাণ নিয়ে ভূমি সংস্কার বোর্ড কোর্ট অব ওয়ার্ডস মামলা চলমান থাকলে উক্ত নালিশি দাগ / খতিয়ান ভুক্ত জমি ব্যতীত উহার অবশিষ্ট অংশের নামজারি ও খাজনা বিষয়ক স্পষ্ট করা দরকার।
৩) বিভিন্ন মৌজা কোর্ট অব ওয়ার্ডস ভুক্ত সম্পত্তির দাগ, খতিয়ান হালনাগাদ করে পুনরায় গেজেট করা প্রয়োজন।
৪) কোর্ট অব ওয়ার্ডসভুক্ত সম্পত্তি অবমুক্তির ক্ষেত্রে সেটেলমেন্ট আদালত / ল্যান্ড সার্ভেট্রাইবুনাল / দেওয়ানী আদালত কর্তৃক প্রাপ্ত রায়ের আদেশ মোতাবেক রেকর্ড কারেকশন মূলে কোন পদ্ধতিতে কোর্ট অব ওয়ার্ডসভুক্ত সম্পত্তি অবমুক্তি নামজারি, খাজনা প্রদান ও অনলাইনে সংশোধিত রেকর্ড প্রদর্শন সংক্রান্ত বিষয়ে উক্ত প্রজ্ঞাপনের সুনিদিষ্ঠ ডিরেকশন প্রয়োজন।
৫) কোর্ট অব ওয়ার্ডস সম্পত্তি / আংশিক৷ কোর্ট অব ওয়ার্ডস ভুক্ত সম্পত্তির খাজনা গ্রহণ ও শ্রেণীভেদে খাজনার পরিমাণ কত হবে তা পুনঃনির্ধারণ করা প্রয়োজন।
৬) সিএস / এস এ দাগ কে কেন্দ্র করে সাধারণ কোর্ট অব ওয়ার্ডসভুক্ত সম্পত্তির, সরকারি স্বার্থ নির্ণয় করা অতি জরুরী। কিন্তু সর্বশেষ রেকর্ড জরিপ অর্থাৎ বিআরএস বা আরএস ভলিউম বইতে স্পষ্ট প্রকাশিত দাগ, খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি যা ইতিমধ্যে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড ভুক্ত হয়েছে, কিন্তু ঐ নালিশী দাগের অবশিষ্ট কিছু অংশ যদি তিন নাম্বার খতিয়ানভুক্ত অর্থাৎ কোর্ড অব ওয়ার্ডস খতিয়ানভুক্ত হয় তাহলে সেক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রকাশিত রেকর্ডিংয় ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড ভুক্ত সম্পত্তি কিভাবে নামজারি করা হবে সে বিষয়ে সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন।
১ম পর্ব চলবে।