আজ মঙ্গলবার, ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনা, জয় ও পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ৩ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ৩, ২০২৫, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ
হাসিনা, জয় ও পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ৩ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে

Sharing is caring!

Manual7 Ad Code

বাসস:

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে। এই তিন মামলায় দুই তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৭৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি শেষ হয়েছে।

আজ সোমবার (৩রা নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে দুই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট তিনজন। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য ও জেরার জন্য আগামী ৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

এর মধ্যে শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। এদিন তার সাক্ষ্য শেষে আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য খোরশেদের পক্ষে তাকে জেরা করেন খোরশেদের আইনজীবী।

এদিন তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা শেষ না হওয়ায় আগামী ৬ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরার জন্য দিন ধার্য করা হয়। মামলায় সাক্ষ্য হয়েছে ২৯ জনের।

শেখ হাসিনা ও জয়সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দেন রাজউকের গুলশান জোনের সাবেক পরিচালক তানজিল্লুর রহমান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারি পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।

Manual3 Ad Code

এদিন আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য খোরশেদের পক্ষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এম রাশেদুল হাসানকে জেরা করেন তার আইনজীবী শাহিন আহম্মেদ। তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা শেষ না হওয়ায় আগামী ৬ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরার জন্য দিন ধার্য করা হয়। এ মামলায় সাক্ষ্য শেষ হয়েছে ২৮ জনের।

Manual7 Ad Code

তবে আজ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৬ নভেম্বর দিন ধার্য রয়েছে। এ মামলায় সাক্ষ্য শেষ হয়েছে ২২ জনের।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর দেলোয়ার জাহান রুমি বাসস’কে বলেন, শেখ হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে করা তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ও জয়ের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা চলমান। আর পুতুলের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। আইনানুযায়ী তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য ও জেরার মাধ্যমে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। আমরা আশা করছি যথা নিয়মে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হবে।

Manual8 Ad Code

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় অপর আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউক-এর সাবেক সদস্য শফি উল হক, খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

অপরদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দু’জনসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারি পরিচালক  এস এম রাশেদুল হাসান।

শেখ হাসিনা ও জয় ছাড়াও এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

এছাড়াও, রাজধানীর পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদি হয়ে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

মামলার অপর ১৬ আসামি হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউক-এর সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

Manual6 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code