Sharing is caring!
জুড়ী প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের এলবিনটিলা খাসিয়া পুঞ্জিতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ”কম্প্যাশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ” পরিচালিত মধ্য ও দক্ষিণ বাংলাদেশ শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্যোগে বিশ্ব শিশু দিবস পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে দিনব্যাপী আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, প্রতিভা প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকালে প্রকল্প অফিস প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রকল্পের চেয়ারম্যান সুউইং আমলেনরং এর সভাপতিত্বে ও সমাজকর্মী মাইকেল নংরুমের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসাবে শিশু অধিকার বিষয়ে আলোচনা করেন জুড়ী উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ডিকো সুরং, সমাজকর্মী বন্যা লংডঃ, রাজেন রুপসী, আবিদা নংরুম, তারিয়াং খংবঃ, ফায়েনসী পঃকেনটেং সহ অনেকেই। প্রকল্পের ২৭৬ জন উপকারভোগী শিশু প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে শিশু অধিকার রক্ষায় জুড়ী উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন- শিশু অধিকার রক্ষায় ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শিশুর প্রতি যত্নবান হওয়া, তাদের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা এবং তাদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষাকে মূল্য দেওয়া পরিবারের দায়িত্ব। শিশুশ্রম বা শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং প্রতিবেশী শিশুদের অধিকার রক্ষায় সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিশুর সুরক্ষায় শক্তিশালী আইন প্রণয়ন ও তা কার্যকর করতে রাষ্ট্রকে ভূমিকা রাখতে হবে। শিশু অধিকার নিশ্চিত করা মানেই একটি নিরাপদ, সমৃদ্ধ ও মানবিক ভবিষ্যৎ গড়া। শিশুরা আজকের পৃথিবীর আগামী দিনের পথপ্রদর্শক। তাদের অধিকার রক্ষা করতে পারলেই তারা পূর্ণ সম্ভাবনায় বিকশিত হতে পারবে এবং দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই, আসুন আমরা সবাই মিলে শিশু অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ হই।
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে তিনি বলেন, বাস্তবে আমাদের দেশে কোনো কোনো শিশুর এতো অল্প বয়সে বিয়ে হয় যখন তাদের কাছে বিয়ের অর্থই পরিষ্কার থাকে না। শারীরিক ও মানসিক পূর্ণতাপ্রাপ্তির আগেই বাল্যবিবাহের শিকার হয় বিশেষ করে মেয়েরা। বাল্যবিবাহের খেসারত ছেলেমেয়ে উভয়কে দিতে হলেও মেয়েদের জীবনে এর কুফলের পরিধি ও মাত্রা ভয়াবহ এবং ব্যাপক। বাল্যবিবাহের মধ্য দিয়ে এক ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্দশাগ্রস্ত দাম্পত্য জীবনের দিকে মেয়েশিশু বা কিশোরীকে ঠেলে দেয়া হয়। অল্প বয়সী মায়েরাই বেশি মাতৃমৃত্যুর শিকার হয়। জীবন সম্পর্কে অনভিজ্ঞ নারী সংসারে নানাভাবে নির্যাতিত হয়। তার শিক্ষা ও দক্ষতা লাভের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। জীবিকার সংগ্রামে পিছিয়ে পড়ে নারী। দক্ষ শ্রমিক থেকে বঞ্চিত হয় পরিবার-সমাজ-অর্থনীতি। তাই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা প্রয়োজন।