Sharing is caring!
দোয়েল, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বাঘায় স্ত্রীর শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের মামলার প্রধান আসামী গৃহবধু অনন্যা খাতুনের স্বামী মোঃ সুরুজ (৩২)কে ঢাকা মহানগরীর পল্লবী থানাধীন মিরপুর-১২ (লালডেগ) নামক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে ছদ্মবেশে রিকসা চালক হিসেবে কাজ করতো।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা প্রদ্যুৎ কুমার প্রামানিক জানান,শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে র্যাব-৪ ও পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে থানায় আনা হয়। শনিবার সকালে তাকে ৭দিনের রিমেন্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সে বাঘা পৌরসভার চক নারায়ণপুর গ্রামের শহিদুল মাঝির ছেলে। এ মাসের ১তারিখে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, প্রেম ঘটিত সম্পর্কে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন সুৃরুজ- অনন্যা দম্পতি। মাদকাসক্ত সুরুজ বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় নেশার টাকা ও যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতেন। মৃত্যুর আগে গৃহবধু তাঁর মাকে ফোন করে নির্যাতনের বিষয়টি জানান। হত্যাকান্ডের পর সুরুজ আত্নগোপনে চলে যায়। তার পরিবারের দাবি ছিল, অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। প্রতিবেশী আজিজুল হক ও সান্টু জানিয়েছেন, বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে তারা ওই বাড়িতে গিয়ে বাড়ির গেট বন্ধ দেখেন। ধাক্কা দিলে বাড়ির লোকজন দরজা খুলে দিলে আগুনে ঝলসানো গৃহবধু অনন্যা খাতুনকে পড়ে থাকতে দেখেছেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১০ বছর আগে এজাহারনামীয় প্রধান আসামী মোঃ সুরুজ (৩২) এর সাথে অনন্যা খাতুন মুন্নি (২৫)’র বিয়ে হয়। তাদের ২ টি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর শশুর-শাশুড়ী অনন্যাকে প্রায়শই গালিগালাজ ও অপমান করতো। তাদের প্ররোচনাতেই সুরুজ হঠাৎ ২,৫০,০০০/-টাকা যৌতুক দাবি করে। অনন্যা খাতুনের পরিবার তার সংসারে সুখের কথা বিবেচনা করে গত ২০১৮ সালের মে মাসে ১,০০,০০০/- টাকা যৌতুক প্রদান করে। এর পরেও সুরুজ তার পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনায় আরও ১,৫০,০০০/- টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে অনান্যকে বিভিন্ন সময়ে মারপিট এবং শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো সুরুজ । এ নিয়ে গত মাসের ৩১ তারিখ অনন্যার সাথে সুরুজ এর ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে চড়-থাপ্পড় মারে।
ঘটনার দিন ১নভেম্ভর ভোর ৪টার দিকে যৌতুকের টাকার জন্য অনন্যার উপর রাগ করে বাড়ির উঠানে নিয়ে পুড়িয়ে মারার উদ্দেশ্যে গায়ে ডিজেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় সুরুজ । তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা অনন্যাকে উদ্ধার করে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানকার চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে সকাল ৮টায় রামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর বিকাল পৌণে ৬টায় চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। পরে অনন্যার সহোদর বড় ভাই মিঠু বাদি হয়ে সুরুজসহ তার পিতা-মাতাকে আসামী করে বাঘা থানায় হত্যা মামলা দাযের করেন।
বাঘা থানার অফিসার (ওসি) আফম আছাদুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার সুরুজকে শনিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলায় জড়িত অন্যদেও গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রযেছে।