Sharing is caring!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ঢাকা, ২০ নভেম্বর, ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) : বুধবার গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৭ জন নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইসরায়েল ও হামাস পরস্পরকে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে চলমান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করেছে।
গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এটাই ছিল গাজায় সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
প্রায় এক বছর ধরে যুদ্ধবিরতি থাকা সত্ত্বেও ইসরাইল লেবাননের হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ধারাবাহিক হামলার ঘোষণা দেওয়ার সময় এই হামলা চালানো হয়েছিল।
হামাস কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত ভূখণ্ডের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানায়, বুধবার ইসরাইলের হামলায় উত্তরে গাজা সিটিতে ১৪ জন ও দক্ষিণে খান ইউনিস এলাকায় ১৩ জন নিহত হয়েছে।
এএফপির সঙ্গে যোগাযোগ করা দুটি হাসপাতালও একই সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী আত্মপক্ষ সমর্থনে দাবি করেছে যে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন’ করে দক্ষিণে সেনাদের ওপর হামাস হামলা চালানোর জবাবে তারা পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
হামাস ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং হামলাগুলোকে ‘বিপজ্জনক উসকানি’ হিসাবে নিন্দা করে বলেছে, এই হামলা যুদ্ধবিরতিকে বিপন্ন করতে পারে।
৫০ বছর বয়সী আহরাফ আবু সুলতান এএফপিকে জানান, তিনি দক্ষিণে এক বছর বাস্তুচ্যুত থাকার পর, রোববার তার পরিবারের সঙ্গে গাজা সিটিতে তার বাড়িতে ফিরে এসেছেন। আমরা মাত্র দুই দিন আগে আমাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির একটি ঘর মেরামত করে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করতে পেরেছিলাম এবং এরই মধ্যে আবার বোমাবর্ষণ ও মৃত্যু শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘তারা আমাদের নিঃশ্বাস নেওয়ারও সুযোগ দিচ্ছে না।’
গাজা সিটির বাসিন্দা নিভিন আহমেদ বলেন, তিনি তার প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখন ইসরাইলের বোমাবর্ষণ ‘এক সেকেন্ডের মধ্যে সবকিছু উল্টে দেয় এবং আমরা বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই ও ধোঁয়া উড়তে দেখি।’
তিনি আরো বলেন, হামলার পর মানুষ দৌড়াচ্ছিল ও অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্সগুলো শহীদদের বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল।
নিভিন বলেন, ‘এর পরের ক্ষেপণাস্ত্রটি আমাদের ওপর পড়তে পারে।’
– ট্রাম্প শান্তি পরিকল্পনা –
গাজায় গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও অনেক এলাকায় প্রবেশের অসুবিধার কারণে এএফপি স্বাধীনভাবে উভয় পক্ষের দেওয়া মৃতের সংখ্যা বিশদভাবে যাচাই করতে পারছে না।
মার্কিন-মধ্যস্থতায় পরিচালিত একটি চুক্তির ভিত্তিতে এই যুদ্ধবিরতি করা হয়েছে, যার মধ্যে হামাসের হাতে আটক শেষ ৪৮ জন জিম্মিকে ইসরাইলে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। যদিও যুদ্ধবিরতির প্রথম দিকে সমস্ত জীবিত জিম্মিকে হস্তান্তর করা হয়, মৃতদের ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলছে এবং তিন জন জিম্মির লাশ এখনও গাজায় রয়ে গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায়ের বাস্তবায়ন এখনও সকল পক্ষ সম্মত হয়নি। বিশেষ করে, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ, একটি অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা ও একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে তারা সম্মত হয়নি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অবশ্য সোমবার ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে সমর্থন করে মার্কিন-খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে, যদিও এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের ‘রাজনৈতিক ও মানবিক দাবি’ পূরণ করতে ব্যর্থ বলে হামাস প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে।