আজ রবিবার, ২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভুট্টাগুঁড়া দিয়ে তৈরি হতো ডায়াবেটিসের ওষুধ! ফেসবুকে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি হতো নকল স্বাস্থ্য সাপ্লিমেন্ট

editor
প্রকাশিত মে ২৫, ২০২৫, ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ
ভুট্টাগুঁড়া দিয়ে তৈরি হতো ডায়াবেটিসের ওষুধ! ফেসবুকে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি হতো নকল স্বাস্থ্য সাপ্লিমেন্ট

Oplus_16908288

Sharing is caring!

পিনাকি দাসগুপ্ত:!
ফেসবুকে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নকল ওষুধ ও ফুড সাপ্লিমেন্ট (সম্পূরক খাদ্য) বিক্রির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু প্রতারক চক্র।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্যই জানিয়েছে এ চক্রের সক্রিয় সদস্য মো. রাজু মিয়া। ডিবি পুলিশ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পূর্ব শেওড়াপাড়ার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার ও  জব্দ করে বিপুল পরিমাণ নকল পণ্য।
এ ব্যাপারে ডিবি-মতিঝিল বিভাগের এডিসি রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের জানিয়েছেন, তাদের কাছে তথ্য ছিল যে, একটি অসাধু চক্র দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুক পেজে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিদেশি ব্র্যান্ডের নামে নকল ‘অর্গানিক মাখা পাউডার’, ‘ন্যাচারাল হেলথ সাপ্লিমেন্ট’, ‘গ্যাসট্রিক ক্লিয়ার’ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ‘ডায়াকোর্স’ নামে নকল ওষুধ তৈরি ও বিক্রি করে আসছে।
এই তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। শনাক্ত করা হয় প্রতারক রাজুকে। পণ্য কেনার কথা বলে সুকৌশলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে পূর্ব শেওড়াপাড়ার আলহামদুলিল্লাহ হাউজে অভিযান চালিয়ে তাকে তার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ নকল পণ্য।
এসব নকল পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১১৩ প্যাকেট নকল ‘অর্গানিক মাখা পাউডার’, ৯৫ প্যাকেট নকল ‘ন্যাচারাল হেলথ সাপ্লিমেন্ট’, ১৫টি প্লাস্টিকের কৌটায় নকল ‘গ্যাসট্রিক ক্লিয়ার’, ২০টি নকল ‘ডায়াকোর্স’ ওষুধ, ২৫টি খালি প্লাস্টিকের কৌটা (‘ডায়াকোর্স’ লেখা), ৪০টি ‘গ্যাস্ট্রিক ক্লিয়ার’, ৪০টি ‘ডায়াকোর্স’ লেবেল, একটি মোবাইল ফোন ও একটি ডিজিটাল স্কেল উদ্ধার করা হয়।
এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার দক্ষিণ মাছুয়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে মো. রাজু মিয়া। জিজ্ঞাসাবাদে রাজু জানিয়েছেন, গত আড়াই বছর ধরে এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। তার মত রাজধানীতে বেশ কিছু চক্র এ কাজে জড়িত রয়েছে।
রাজু জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) বিভিন্ন চিকিৎসকদের কথা বার্তা শুনতেন। তারা যেসব ওষুধ ও সম্পূরক খাদ্যের কথা বলতেন, সেগুলোর নকল তিনি তৈরি করতেন।
এসব নকল পণ্য তৈরিতে ভুট্টা, যব, সিমসহ অন্যান্য বিচি গুঁড়া করে প্যাকেট করতেন। এরপর  লাগানো হতো লেভেল। আর এসব নকল পণ্য ফেসবুকে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিক্রি করতেন।
রাজু মিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এ ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। রাজু মিয়ার বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়ার পর নিজেই তিনি তার অপকর্মের কথা স্বীকার করেছেন। ফলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আনার প্রয়োজন হয়নি। আদালতের নির্দেশে শুক্রবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।