এম.এ.মান্নান,নাগরপুর(টাঙ্গাইল)সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের তেবাড়িয়া কবরস্থানসংলগ্ন সড়কে অবস্থিত বক্স কালভার্ট সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পাটাতনে জোড়াতালি দিয়ে বসানো স্টিল শিট এখনো চলাচলের একমাত্র ভরসা। কার্নিশ ভেঙে পড়ছে একাধিক স্থানে, ঢালাইয়ে ধরেছে গভীর ফাটল—প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা, আর দুর্ভোগ পেরিয়ে গেছে সীমা।সড়কটি সলিমাবাদ, বেকড়া, ধুবড়িয়া ও নাগরপুরের চারটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সংযোগপথ। প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার মানুষ—স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, রোগী, বৃদ্ধ, কর্মজীবী মানুষ এবং কবরস্থানে লাশবাহী যানবাহন—এই সড়ক ও সেতু ব্যবহার করেন। বিশেষ করে তেবাড়িয়া হাটের দিনে গবাদিপশু ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ সেতুর ঝুঁকিকে ভয়াবহ মাত্রায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় ইজিবাইক চালক মনির হোসেন বলেন,“সেতুর অবস্থা ভয়াবহ। গরু বা যাত্রী নিয়ে পার হতে গেলে সবসময় আতঙ্কে থাকি। যাত্রী নামিয়ে আলাদা করে পার হতে হয়।”
স্থানীয় বাসিন্দা আফজাল উদ্দিন বলেন,“হাটের সময় অনেক মানুষ আসে, কিন্তু সেতুর বেহাল দশা দেখে ফিরে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এমনকি লাশ নিয়ে কবরস্থানে যাওয়াও এখন নিরাপদ নয়।”
সলিমাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেন খান পল বলেন,“প্রতিদিন হাজারো মানুষ ও যানবাহন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। বর্তমান অবস্থা চলাচলের অনুপযুক্ত। দ্রুত সংস্কার ছাড়া উপায় নেই।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক উপজেলা কমান্ডার সুজায়েত হোসেন বলেন,“দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে একাধিকবার সেতু পরিদর্শন করা হয়েছে। আশ্বাস মিলেছে বহুবার, কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি। দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ জরুরি।”
সলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মনির হোসেন ভূঁইয়া বলেন,“এই রাস্তা হাট, স্কুল, কলেজ ও কবরস্থানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি ইউএনও ও উপজেলা প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।”
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডি মোঃ তোরাপ আলী বলেন “উন্নয়নের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”
উল্লেখ্য, দীর্ঘ এক দশক ধরে অবহেলিত এই সেতু এলাকাবাসীর জন্য এখন বিপদের আরেক নাম। শিক্ষা, চিকিৎসা, হাট এবং জানাজা—সব ক্ষেত্রেই নির্ভর করতে হয় এই জনপথের ওপর। তাই এলাকাবাসীর একটাই দাবি: আর নয় প্রতিশ্রুতি, এবার চাই দৃশ্যমান সংস্কার।