আজ রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজনগরে মনু নদীর খনন কাজে বালুর নীচে অর্ধশতাধিক কৃষকের মৌসুমী সবজি

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৫:২৮ অপরাহ্ণ
রাজনগরে মনু নদীর খনন কাজে বালুর নীচে অর্ধশতাধিক কৃষকের মৌসুমী সবজি

Sharing is caring!

জাফর ইকবাল মৌলভীবাজার থেকে,

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার খাস প্রেমনগর এলাকায় মনু নদীর খনন কাজ করতে গিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা বালু ফেলে কৃষকের ২ শতাধিক বিঘা সবজি ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের উপর। সবজি ক্ষেতের মাচা ভেংঙ্গে দিয়ে ও সবজি বালু দিয়ে ঢেকে ফেলায় অর্ধ শতাধিক কৃষক লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তারা সবজি উৎপাদন করতে চড়া সুদে ও এনঞ্জিও থেকে ঋন নিয়ে পড়ছেন বিপাকে। দিশাহারা কৃষকের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ। এলাকায় বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। এখানকার উৎপাদিত সবজি রাজনগর ও মৌলভীবাজার উপজেলার সবজির চাহিদা পুরন করে বাহিরের জেলা গুলোতে যায়। এখানের বিষ ও ফরমালিন মুক্ত সবজির যেমন রয়েছে চাহিদার একি সাথে কৃষক ভাল মুল্য পেয়ে থাকেন। তাই মনু নদীর পাড়ে এখানকার কৃষকরা সবজি উৎপদনে ঝুকে পড়েছেন। গত বন্যায় সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা খাসপ্রেম নগরের মানুষ। বন্যা ধাক্কা সামাল দিতে সবজি চাষ করেছিলেন। কিন্তু মনু নদীর খনন কাজ করতে গিয়ে বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে তাদের সবজি ক্ষেত।

খাস প্রেম নগর গ্রামের কৃষক আকবর মিয়া, জিল্রুর রহমান,সাইফুর মিয়া, ফজর মিয়া, করিম মিয়া, হান্নান মিয়া, গোরাম হোসেন,সিকন্দর মিয়া, কলন্দর মিয়া, সুয়েব মিয়া, সোনাবর মিয়া, ইসকন্দর মিয়া, নোমান মিয়া, সোনাওর মিয়া, জামাল মিয়া, ইছুব মিয়া, আনুর মিয়া, বাহার আলী, মছব্বির মিয়া, মজমিল মিয়া, ওয়াছির সিয়া,সজ্জাদ মিয়া,শফিক মিয়া,রফিক মিয়া, হিরন মিয়া, সুন্দর মিয়ি, বাচ্চু মিয়া,রেনু মিয়া, গনি মিয়া, আনর মিয়া, জুয়েল মিয়া, শামসেদ মিয়া, ফটিক আহসদ, নাজির মিয়া, মছই মিয়া, মাসুক মিয়া, আলী মিয়া,আমজদ মিয়া, মামজদ মিয়া, জিতু মিয়া, বাচ্চু মিয়া, নীলু মিয়া, নুরু মিয়া, মিলন মিয়া,আকলু মিয়া, মতিন মিয়া, আনছার, জাবেদ, হারুন,সানচু, মানচু, মছদ্দর,কবির, সিরাজ,জাকির, মোস্তফা, আজাদ,সায়েদ মিয়া বলেন,মনু নদী খননে উত্তোলন করা বালু মাটি দিয়ে আমাদের ফসল চাপা দেওয়া হচ্ছে। ফুল কই আসা সবজি খেত মাটি চাপা পড়ছে। আমরা সুদ ও এনঞ্জিও এর কৃস্তি নিয়ে সবজি চাষ করেছি। এখন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যওয়ায় আমরা ঋন দেবো কোথায় থেকে। আর পরিবার পরিজন নিয়ে কি খাবো। গত ১৮ ও ২৪ সালের বন্যার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এর মধ্যে আবার চোখের সামেনে সব শেষ হয়ে গেল।


এই কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ট্রানের ম্যানেজার মো: দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদেরে বালু রাখার জন্য এলেকা পরিদর্শনে এসে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী নদীর পাড় দেখিয়ে দিয়েছেন। এমনকি মাটি গুলো নদী পাড়ে বড় বড় গর্তে ফেলতে নিষেধ করেছেন। আমরা আদেশ মোতাবেক কাজ করছি। এতে কৃষকের ফসলের ক্ষতি হলেও আমাদের করার কিছু নেই।

এ ব্যাপার মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জাবেদ ইকবাল বলেন, বালু রাখার জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ডর। জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে জরিপ করে সীমানা আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। আর গর্ত গুলোতে বালু ফেলার বিষয় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। ওগুলো বিক্রি করা হবে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ঠিকাদারকে অনুরুধ করেছি কৃষকদের যথা সম্ভব ক্ষতিপুরণ দেওয়ার জন্য। আমি কৃষকদের ব্যাপারে পজেটিভ। আর এ মৌসুমে কাজ না করলে আর কাজ করা যাবেনা।


এব্যাপারে মোবাইল ফোনে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন রিসিভ করেননি।