আজ শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিনমাসের মধ্যে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: নাহিদুল ইসলাম

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১০, ২০২৪, ০৭:১১ অপরাহ্ণ
তিনমাসের মধ্যে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: নাহিদুল ইসলাম

Sharing is caring!

তাপস দাশ শ্রীমঙ্গল:
চা শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে  আগামী তিন মাসের মধ্যে বলে জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম। এর আগে (৪ নভেম্বর) সোমবার শ্রীমঙ্গলে নির্বাচনের দাবিতে চা শ্রমিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দরা একত্রিত হয়ে র‍্যালী ও পথসভা সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে।
রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরের দিকে মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত জানান স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের।
মি. নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইতিমধ্যে চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দুই কিস্তিতে ২৫ লক্ষ টাকা পেয়েছি। চা শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান বক্তব্য হচ্ছে যে, উনাদের পক্ষে আর বেশী টাকা ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে না। তার প্রেক্ষিতে চা শ্রমিক ইউনিয়ন গত ২৫ সেপ্টেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের সচিব এ.এইচ.এম সফিকুজ্জামান স্যারের সাথে শ্রম মন্ত্রনালয়ে একটি বৈঠক হয়। সে বৈঠকে চা শ্রমিক ইউনিয়ন তাঁদের যাবতীয় সমস্যা ও নির্বাচনের গুরুত্বের কথা সচিব স্যারকে অবহিত করেন। এবং অর্থের ব্যবস্থা না হওয়ার কারণে নির্বাচন হচ্ছে না সে বিষয়েও সচিকে অবগত করেন। তার প্রেক্ষিতে সচিব মহোদয় যে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন। এটার যে রেজুলেশন, সে রেজুলেশনের মধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এবং শ্রম বিধি-মালা, ২০১৫ অনুযায়ী শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
মি. নাহিদুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে সরকার থেকেই এধরণের একটি সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। সচিব স্যার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন, অবশিষ্ট যে অর্থ প্রয়োজন হবে, এই অর্থ যাতে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা যায়। আমরা আশাকরি এই অর্থের সংস্থানটা নিশ্চিত হলেই চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন শুরু করতে পারবো। আগামী তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে, এটা আমি আশাবাদী। আমাদের সরকার যেভাবে কাজ করছেন, মন্ত্রনালয় যেভাবে কাজ করছে তাতে আমি আশাবাদী যে আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, ‘আপনারা জানেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বৃহত্তর একটি ট্রেড ইউনিয়ন। এখানে এক লক্ষ কর্মঠ শ্রমিকসহ প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ সংগঠনটির আওতায় রয়েছে। এই সংগঠনে তিন বছর ধরে নির্বাচন হচ্ছে না। সরকারকে আমরা নির্বাচন করে দেয়ার দায়িত্ব দিয়ে দিছি। তাছাড়া অনেক বিষয় আছে সরকার করে দিচ্ছি, করছি। কিন্তু এই মুহুর্তে কোন নির্বাচন হচ্ছে না। সেজন্যই শ্রমিকরা নির্বাচনের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে।’
মি. বিজয় হাজরা আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি। অদ্যাবধি নির্বাচন হচ্ছে না, নির্বাচন না হলে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ হচ্ছে। সংগঠনের নেতৃত্বের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হচ্ছে। সেজন্য চাই, দ্রুত গতিতে নির্বাচন করে দেয়া হোক। আর নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হোক, সেটাই আমরা প্রত্যাশা করি। গত (৪ নভেম্বর) শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলামের হাতে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা স্মারকলিপি প্রদান করেছিলাম। তিনি জানান, আগামী তিন মাসের মধ্যে চা শ্রমিকের নির্বাচন সম্পন্ন হবে।’
মি. নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে আনুমানিক এক লক্ষ ভোটার এবং ২২৮ টি কেন্দ্রের (সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলার ২০২টি কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলার ২৬টি কেন্দ্র), মোট ২২৮ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩৪৩ জন পোলিং অফিসার, ৩৪৩ জন পোলিং সহকারী, ৯১২ জন পুলিশ সদস্য ও ৯১২ জন আনসার সদস্য নিয়োগ করে এই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এবং এই নির্বাচনটা একযোগে ২২৮টি কেন্দ্রে ৫টি জেলা ও ২১টি উপজেলাতে হবে। সেক্ষেত্রে যে সম্ভাব্য খরচ, আমরা একটা ধারণা করছি যে ৭৫ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।’
মি. নাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ভোট গ্রহণের সময় দায়িত্বপালনকারীদের খাতে ধরা হয়েছে ২০ লাখ ১৩ হাজার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খাতে ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ৫৩ হাজার ৯২০ টাকা, এবং ব্যালট পেপার ছাপানো, নির্বাচনী সামগ্রী ও অন্যান অনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ আনুমানিক ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৭৬ লাখ ৬৬ হাজার ৯২০ টাকা নির্বাচনে খরচ ধরা হয়েছে।’