Sharing is caring!
তাপস দাশ, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাঅষ্টমীতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভক্তিময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। উপজেলার সাতগাঁওয়ের রঘুনাথপুরে শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী কুমারী পূজা।
এ বছর দেবীর মালিনী রূপে পূজিত হয়েছেন সাত বছরের অর্পা চক্রবর্তী। বনগাঁও গ্রামের নুপুর চক্রবর্তী ও অনুরাধা চক্রবর্তীর কন্যা অর্পা স্থানীয় এক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মন্দির প্রাঙ্গণে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। নতুন বস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অর্পাকে দেবীর আসনে বসানো হয়। মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে পুরোহিতেরা পূজা শুরু করেন। এরপর ভক্তরা একে একে দেবী প্রণাম করেন।
আয়োজকদের ভাষ্য, নারীর মাঝে দেবীসত্ত্বার প্রতিফলন ঘটানোর মাধ্যমই কুমারী পূজা। ১ থেকে ১৬ বছরের কন্যাশিশুদের প্রতি বছর ভিন্ন রূপে পূজিত করা হয়।
পুরোহিত ভজন চক্রবর্তী বলেন, “কুমারী পূজা মূলত জগত মাতার পবিত্রতার প্রতীক। স্বামী বিবেকানন্দই প্রথম এই পূজা জনপ্রিয় করেন। মানুষের মধ্যেই মা দুর্গা বিরাজ করেন—এই উপলব্ধিই এ পূজার প্রধান বার্তা।”
দর্শনার্থী তমা দাশগুপ্ত বলেন, “মায়ের পূজা দেখে মন ভরে গেছে। তাঁর কাছে প্রার্থনা করেছি, আমাদের যেন সব অশুভ শক্তি থেকে রক্ষা করেন।”
সহকারী অধ্যাপক জলি পাল মন্তব্য করেন, “দেশ আজ অস্থিরতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। মায়ের কাছে কামনা করেছি, যেন হানাহানি দূর হয় এবং আমরা শান্তিতে একসঙ্গে থাকতে পারি।”
আয়োজক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রজত চক্রবর্তী জানান, “আনন্দময়ী কালীবাড়িতে টানা ২৮ বছর ধরে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মৌলভীবাজারে এটি একমাত্র আয়োজন। বাংলাদেশে হাতে গোনা কয়েকটি স্থানে কুমারী পূজা হয়, সিলেট বিভাগে রয়েছে দুটি।”
তিনি আরও বলেন, “নারীই মা। তাঁদের শ্রদ্ধা ও সেবা করা মানেই দেবীকে পূজা করা।”