Sharing is caring!

দোয়েল,বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
বাঘায় স্বজন-ক্রেতাদের আমে জমেছে বাঘার কুরিয়ার ব্যবসা। বিশেষ করে কোরবানির ঈদের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন হাজার মণ আম যাচ্ছে এ সার্ভিসের মাধ্যমে।
সরেজমিন কুরিয়ার সার্ভিসগুলোয় দেখা গেছে, মোটা পলিথিন ও পেপারে মোড়ানো মৌসুমি আমে ঠাসা ঝুড়ি-কার্টন।
কুরিয়ারে পাঠানো হবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। অনলাইনভিত্তিক বেচাকেনাও বেড়েছে। উপহার কিংবা আত্মীয়স্বজনের বাসায় আম পাঠানোর এ পদ্ধতিতে এখন জমজমাট রাজশাহীর বাঘা উপজেলা।
আম পরিবহনে যুক্ত হয়েছে উপজেলার অন্তত ১১টি কুরিয়ার সার্ভিস। মৌসুম শুরুর পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন হাজার মণ আম যাচ্ছে এ সার্ভিসের মাধ্যমে। বেশিরভাগই আম যাচ্ছে আত্নীয় স্বজন,বন্ধু বান্ধবের বাসায়। সাথে আছে অনলাইনে অর্ডার নেওয়া আম। এ কারণে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় থাকছে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোতে। সার্ভিস চার্জ হিসেবে সুন্দরবন, এ এজেআর সহ কয়েকটি কুরিয়ার সার্ভিস ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের মধ্যে কেজি প্রতি ১৩ টাকা আর অন্য জেলায় প্রতি কেজি ১৬ টাকা করে নিচ্ছে। জননী এক্সপ্রেস পার্সেল সার্ভিস নিয়মিতদের কাছ থেকে নিচ্ছে ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের মধ্যে কেজি প্রতি সাড়ে ১০ টাকা আর ঢাকার বাইরে প্রতি কেজি ১৪ টাকা করে।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা আম বিক্রি শুরু করেছেন। গ্রুপভিত্তিক আম বেচাকেনায় যুক্ত হয়েছেন একঝাঁক তরুণ। তাদের অধিকাংশই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ক্রেতারা অনলাইনে মার্কেটপ্লেস ও ফেসবুক পেজ দেখে আম নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন করছেন। অর্ডার পেয়ে চাষিদের বাগান থেকে সরাসরি আম কিনে কুরিয়ারে পাঠানো হচ্ছে।
বাড়িতে অলস বসে না থেকে ফেসবুকে ‘ফুটস এ্যাডড্রেস’ পেজ খুলে অনলাইনে আম ব্যবসা শুরু করেন নিশ্চিন্তপুর গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা সোহানুর রহমান (শাওন), ‘বাঘা সেভফুট’ এর আশরাফ আলী। তাঁরা জানান, গুণগত মান দেখে এলাকার বাগান মালিকদের কাছ থেকে আম কিনে প্যাকিং করেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। অনেকেই হোম ডেলিভারি দায়িত্ব নিয়ে আম পৌঁছে দিচ্ছেন বাসায়। সোহানুর রহমান (শাওন) জানান,প্রতিদিন তার ১০ মণ আম যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এর মধ্যে বেশি যাচ্ছে হিমসাগর আম।
কার্টনভর্তি আম নিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে আসেন প্রভাষক দীনেশ চন্দ্র। সেই আম তিনি রংপুর জামাইয়ের বাসায় ও দিনাজপুর বিয়াইর বাসায় পাঠাবেন। দুই কার্টনভর্তি আম ঢাকায় চাচার বাসায় পাঠানোর জন্য কুরিয়ার সার্ভিসে আসেন আবুল মাসুদ। তারা বলেন, ‘আমের মৌসুমে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা রাজশাহীর আমের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। আম পেয়ে তাঁরা যেমন খুশি হন, আমাদেরও খুব ভালো লাগে। আমের মৌসুমে স্বজনদের জন্য উপহার পাঠানো রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাঘা শাখার সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলাম ও এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপক আশরাফ আলী বলেন, ‘আমের মৌসুমে ব্যবসাটা অনেক ভালো চলে। অনলাইনে বেচাকেনা হওয়ায় ব্যবসা আরও জমে উঠেছে। আমরাও চেষ্টা করি ভালো সার্ভিস দেওয়ার।’ জননী এক্সপ্রেস পার্সেল সার্ভিস এর ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলাম বলেন,যারা নিয়মিত আম পাঠাচ্ছেন তাদের কাছে ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের মধ্যে কেজি প্রতি সাড়ে ১০ টাকা আর ঢাকার বাইরে প্রতি কেজি ১৪ টাকা করে।