Sharing is caring!

মনিরুজ্জামান লেবু,নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর জলঢাকায় মামাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি হওয়া সেই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ চন্দ্র গাছি।
এর আগে চলতি বছরের ৪, ৫ ও ৬ জানুয়ারি “মামাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাথমিকের শিক্ষক ” শিরোনামে দৈনিক যায়যায়দিন সহ বিভিন্ন পত্রিকায় একটি অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩০ এপ্রিল ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন, জলঢাকা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
তদন্ত কমিটি দীর্ঘ সময় একাধিকবার যাচাই বাছাই পূর্বক ৩০ জুন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, প্রাথমিকভাবে অভিযোগের বিষয়টি প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শরিফা আখতার।
উল্লেখ্য,অনুসন্ধানে জানা যায়,জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের পূর্ব খুটামারা এলাকার মৃত ফজলার রহমানের মেয়ে রাবেয়া বেগমের প্রথম বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ উপজেলার গদা এলাকার মৃত ডাঃ আতিয়ার রহমানের ছেলে ওয়ালিউর রহমানের সঙ্গে। রাবেয়া বেগম ও ওয়ালিউর রহমানের ঘরে জন্ম নেন সেলিনা আক্তার। সন্তান জন্ম গ্রহণের ২-৩ বছরের মাথায় মারা যান ওয়ালিউর রহমান। স্বামীর মৃত্যুর পরপরই মেয়ে সেলিনা আক্তারকে নিয়ে পূর্ব খুটামারা এলাকায় ভাই মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউর রহমানের বাড়িতে আশ্রয় নেন রাবেয়া বেগম। ভাইয়ের বাড়িতে কয়েক বছর থাকার পর জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের চেংমারী ডাঙ্গাপাড়া এলাকার হামিদুর রহমানের (পান্ডা) সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে হয় রাবেয়া বেগমের। তখন থেকেই মামা বাড়িতে বেড়ে ওঠেন সেলিনা আক্তার। মামা মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় বাবা ও মামার নাম একই হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভুয়া কাগজ তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি নেন সেলিনা আক্তার।
তিনি বর্তমানে জলঢাকা পৌর এলাকার আমরুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন। তার চাকরির বয়সও ১২ বছর পেরিয়েছে।
জানা যায়, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ আগস্ট কেন্দ্রীয় প্রাথমিক শিক্ষক নির্বাচন কমিটি চুড়ান্ত নির্বাচিত প্রার্থীর তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান সেলিনা আক্তার। একই বছরে ৩ অক্টোবর চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ চন্দ্র গাছি বলেন,“ অভিযুক্ত শিক্ষিকা সেলিনা আক্তারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হচ্ছে, বিধি মোতাবেক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ”