আজ মঙ্গলবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে চার বাগানের চৌদ্দ’শ চা শ্রমিকের পাশে দাঁড়ালেন মানবিক জেলা প্রশাসক

editor
প্রকাশিত মার্চ ২৯, ২০২৫, ০৬:১৬ অপরাহ্ণ
সিলেটে চার বাগানের চৌদ্দ’শ চা শ্রমিকের পাশে দাঁড়ালেন মানবিক জেলা প্রশাসক

Sharing is caring!

Manual6 Ad Code
সিলেট ডেস্ক:
সিলেটের চা বাগানগুলোর আর্থিক সংকটের কারণে বিগত কয়েক মাস ধরে বেতন ও রেশন না পেয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছিলেন চা শ্রমিকরা। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকট লাঘবে চা বাগানের নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে মানবিক সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে সিলেট সদর উপজেলার ৪টি চা বাগানের ১৪০০ চা শ্রমিকের মাঝে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এর একান্ত উদ্যোগে নগদ সাত লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান ও ১৪ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়।
জেলা প্রশাসকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় নগদ আর্থিক অনুদান ও চাল বিতরণ কার্যক্রমে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ খোশনূর রুবাইয়াৎ, সদর এসি ল্যান্ড মো. মাহবুবুল ইসলাম, মহানগর এসি ল্যান্ড মোঃ আলীম উল্লাহ খান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মেরিনা দেবনাথ, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ, খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণসহায়তা পেয়ে উচ্ছ্বসিত চা শ্রমিকরা জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, মজুরী বন্ধ থাকার পর থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুবই সংকটে আছি। প্রায় সময় অর্ধাহারে অনাহারে দিন পার করতে হয়। জেলা প্রশাসকের মানবিক সহায়তা আমাদের এই কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। আমাদের চা-বাগানের প্রায় সব বাড়িতেই এখন রীতিমতো দুর্ভিক্ষ চলছে।
ত্রাণ হাতে পেয়ে কালাগুল বাগানের একজন চা শ্রমিক বলেন, ডিসি স্যারের আজকের এই সহায়তার ফলে অনেকদিন পর পরিবারের সবাই মিলে পেট ভরে খেতে পারবো। এ খাদ্য সহায়তা পাওয়ার পর হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন ছেড়াগাং টি এস্টেট এর চা শ্রমিকরা। সেসময় তারা বলেন, হামাদের ডিসি স্যার চাউল ও টেকা দিয়েছে। আমরা বাগানের সবাই খুব খুশি হয়েছি।
এসময় চা শ্রমিকরা বন্ধ থাকা মজুরি ও সাপ্তাহিক রেশন প্রদান, বকেয়া পাওনা পরিশোধ, পেনশন, চিকিৎসা, আবাসন, খাবার পানি ও স্যানিটেশন বিষয়ক চা নীতিমালা সমর্থিত তাদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ খোশনূর রুবাইয়াৎ জানান, এ সহায়তায় জনপ্রতি শ্রমিককে ৫০০ টাকা ও ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। সদর উপজেলাধীন বুরজান, কালাগুল, ছেড়াগাং ও খাদিম ফ্যাক্টরি চা বাগানে ১৫ সপ্তাহ ধরে বেতন ও রেশন বন্ধ থাকায় চা শ্রমিকরা অর্ধাহারে অনাহারে অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন। তারা তাদের দুর্দশার কথা সিলেটের জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি বুরজান চা বাগানের ৩৪৬ জন, কালাগুল চা বাগানের ৫৪২ জন, ছেড়াগাং চা বাগানের ৩১২ জন এবং বুরজান ফ্যাক্টরির অর্ন্তগত ২০০ জনসহ সর্বমোট ১৪০০ জন চা শ্রমিকের মাঝে ৫০০ টাকা করে নগদ অর্থ ও ১০ কেজি করে চাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মানবিক সহায়তা খাত থেকে বরাদ্দ প্রদান করে দ্রুততার সাথে চারটি বাগানে একসাথে বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করেন।
উল্লেখ্য, চা শ্রমিকদের ও চা শিল্পের বিদ্যমান সংকট নিরসনে সিলেট জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ অত্যন্ত আন্তরিকতা নিয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। এর পূর্বে লাক্কাতুরা, দলদলি ও কেওয়াছড়া চা বাগানে মজুরি ও রেশন বন্ধ থাকাকালীন সময়ে জেলা প্রশাসক এই তিনটি বাগানের ১২০০ শ্রমিকের প্রত্যেককে ৩০ কেজি করে সর্বমোট ৩৬ মেট্রিক টন চাল ও ৬ লক্ষ টাকার খাদ্যসামগ্রী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি খাত থেকে প্রদান করেন।
Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code