আজ মঙ্গলবার, ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ প্রকাশের জের;অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

editor
প্রকাশিত জুলাই ৩০, ২০২৫, ০৪:২৬ অপরাহ্ণ
সংবাদ প্রকাশের জের;অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code

তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর:

Manual4 Ad Code

 

Manual5 Ad Code

গাজীপুরের কালীগঞ্জে চিকিৎসকের অবহেলায় সাত বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিতম্বে ফোঁড়ার অস্ত্রোপচারের পরপরই রক্তবমি শুরু হলে দ্রæত অবস্থার অবনতি ঘটে শিশুটির। পরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে থাকলেও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের রিপোর্টের পর নড়েচড়ে বসেছে গাজীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গঠিত হয়েছে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি নিহত শিশুর বাবা খন্দকার ইমন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় চিকিৎসক ও হাসপাতালের মালিককে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন।

 

নিহত শিশু কাদ্দিহান খন্দকার সাদ্দান (৭) কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা, যুবদল নেতা ও প্রকৌশলী খন্দকার ইমনের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

 

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় সাদ্দানের নিতম্বে ব্যথা অনুভব করলে তাকে জামালপুর ইউনিয়নের নুবহা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালটির মালিক মো. মিলন মিয়া। সেদিনই কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ফোঁড়ার অপারেশন করতে হবে। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে মাত্র ১৫ মিনিটে অপারেশন সম্পন্ন হয়। অ্যানাস্থেসিয়া দেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. এমরান হোসেন।

Manual2 Ad Code

 

তবে অপারেশনের কিছুক্ষণ পরই শিশুটির শরীরে রক্তবমি শুরু হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয় এবং উত্তরার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হলে রাত ৩টার দিকে শিশুটি মৃত্যুবরণ করে।

 

ঘটনার পর প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিস বা কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর ২৮ জুলাই কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ানা রশীদ হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন।

 

এ ছাড়া গাজীপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. মামুনুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুর রহমান আজাদকে কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে আছেন কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. মো. আব্দুল মুকিব, গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. সাবরীনা মোহনা এবং কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানাস্থেসিয়া) ডা. মোহাম্মদ মুসলিম উদ্দিন। কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

 

Manual1 Ad Code

তদন্ত কমিটির সভাপতি ডা. লুৎফুর রহমান আজাদ জানান, “কমিটির সদস্যদের নিয়ে দ্রæতই ঘটনাস্থলে যাবো। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করবো।”

 

এদিকে, ২৮ জুলাই দিবাগত রাতে শিশুর বাবা খন্দকার ইমন কালীগঞ্জ থানায় চিকিৎসক ও হাসপাতাল মালিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা (নং-২৯) দায়ের করেন।

 

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “অভিযোগ পাওয়া মাত্রই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।”

 

গাজীপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. মামুনুর রহমান বলেন, মামলার পাশাপাশি আমরা প্রশাসনিকভাবে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code