আজ বুধবার, ২৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিডিয়ার ওপরে হামলায় টিআইবির উদ্বেগ

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ৬, ২০২৪, ০৭:২৫ অপরাহ্ণ

Sharing is caring!

Manual6 Ad Code

জাহিদ আহমেদ চৌধুরী

 

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্বার্থান্বেষী মহলের হামলা-ঘেরাওয়ের হুমকি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে মামলা ও হেনস্তার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি বলেছে, গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি। ভিন্নমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের ঢালাও নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাহীনতা মূলত কর্তৃত্ববাদের পুনরাগমনের পথ সৃষ্টি করবে।

বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগের কথা জানায় টিআইবি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কি ফাঁকা বুলি- এমন প্রশ্ন তুলে সংস্থাটি বলেছে, মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করার প্রবণতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের জন্য ভয়ডরহীন পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার চর্চা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

Manual5 Ad Code

বিভিন্ন গণমাধ্যম ঘেরাওয়ের হুমকি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচার মামলা ও হেনস্তার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের শাসনামলে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ১৪ বছরে ৪২ ধাপ নেমেছিল বাংলাদেশ। এ সময়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসংক্রান্ত সব মানদণ্ডেই বাংলাদেশের ক্রমাবনতি হয়েছে। ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন প্রাণহানি ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে এ অবস্থান থেকে উত্তরণের অভ‚তপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও বারবার সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে- উল্লে­খ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন মহল দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, হামলা, ঘেরাওয়ের হুমকিসহ নানা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। দৃশ্যত অতিক্ষমতায়িত কোনো কোনো মহলের স্বার্থের বাইরে গেলেই গণমাধ্যমকে আক্রমণ ও সাংবাদিক হেনস্তা, গণমাধ্যমকে দখল বা খেয়ালখুশিমতো পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে, যা আসলে মুক্ত গণমাধ্যমের সম্ভাবনার জন্য অশনিসংকেত।’

Manual7 Ad Code

গণমাধ্যমের ওপর এ ধরনের আঘাত নতুন বাংলাদেশের অভীষ্টের জন্য মোটেই সুখকর নয় উলে­খ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বিচার হুমকি, হামলা, ঘেরাও, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশীভ‚ত হয়ে যথেচ্ছ মামলা বা ঢালাওভাবে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা প্রকারান্তরে জনবিরোধী কর্তৃত্ববাদের পরিচায়ক। টিআইবি মনে করে, পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের মতো গণমাধ্যমকে নিজের পোষ্যের মতো ব্যবহারের চেষ্টা ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর মুক্তচিন্তা ও বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অবিলম্বে দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য ভয়ডরহীন উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে সুস্পষ্ট ও কঠোর পদক্ষেপ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অন্যথায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফাঁকা বুলিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।’

Manual5 Ad Code

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, টিআইবি বিশ্বাস করে, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ থাকলে বা যারা সরাসরি কর্তৃত্ববাদের দোসরের ভ‚মিকা পালন করেছেন, তাদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। কিন্তু পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সহযোগী ‘ট্যাগ’ দিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যথেচ্ছ মামলা, তথ্য অধিদপ্তরের দেওয়া স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল, হুমকি ও বরখাস্ত করার মতো ঘটনা দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সপক্ষে কোনো ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে না। বরং ভিন্নমতের কারণেই ‘স্বৈরাচারের দোসর’ অভিযোগ তোলার পেছনে স্বার্থান্বেষীদের দুরভিসন্ধি কাজ করছে। শুধু সাংবাদিকতার জন্য কোনো সাংবাদিককে কখনোই শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। পতিত সরকারের দোসর অভিযোগে ‘উইচ হান্টিং’ করে সাংবাদিক হয়রানির চলমান চর্চা অবিলম্বে বন্ধের উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

 

Manual8 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code