ঈদ সতত আনন্দের।
জীবন জীবিকা কেন্দ্রিক রাস্তা ঘাটের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্নও বটে।
এবছরটা ভিন্নরূপের এক বাংলাদেশে আমরা ঈদ উৎযাপন করছি।
আমাকে যারা ঘিরে থাকে অথবা আমি যাঁদের জড়িয়ে থাকি তাদের অধিকাংশ স্বজন দেশে চলে গেছে ঈদ করতে। ফাতেমা বুয়াকে নিয়ে এবার আমার ঈদ ধানমণ্ডির একলা বাসায়।ড্রাইভারও চলে গেছে তার পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে।
এই অভাগা সময়ে আব্বার কথা খুব মনে পড়ছে, তিনি বলতেন, আমার সন্তানদের বিপদ-আপদে আল্লাহ স্বয়ং ফেরেশতা দিয়ে তার সমাধান করে দেয়।
ক্যাফেলাইটিক্স কফি শপের স্বত্তাধিকারী জনি প্রসঙ্গে পুরোনো কথাটি আবার নতুন করে মনে এলো।
জনি, যেই শুনেছে আমি ঈদে কোথাও যাচ্ছি না,
একলা ঈদ করছি বাসায়—সঙ্গে সঙ্গে আমাকে অভয় দিয়ে অনেকটা নিশ্চিন্ত করে বললো—আন্টি আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। ঈদের দিনের খাবার আমি পাঠাবো আপনাকে।
অন্য কোনো সাহায্য লাগলে আমাকে বলবেন, রাত ২/৩টা—যা হোক আপনি শুধু একটা কল করবেন আমার লোক এসে যে কোনো হেল্প করে দেবে আপনাকে।
মনে মনে ভাবলাম, আব্বার কথাই মনে হয় ফলে যাচ্ছে।
জনিকে চিনি বেশ কিছুদিন। কবি রফিক আজাদের পরম ভক্ত। জনি নিজেও বড়মাপের লেখক। আমাজান থেকে ওর বই প্রকাশিত হয়। এরমধ্যেই ওর বড় মনের পরিচয় পেয়েছি আমি। কিন্ত ওযে এতটা মানবহৈতেষি জানা ছিলো না।ঈদের দিনের খাবারগুলো ঠিক সন্তানের মতো কি যে যত্ন করে পাঠিয়েছে।কি বলবো!
আল্লাহতায়ালা তোমার ভালো করুক জনি।
ছোটভাই শীতল অবশ্য ঈদের নামাজ শেষ করে দেখা করে গেছে। সঙ্গে করে ওর বাসায় নিয়ে যেতে চেয়েছে—কোথাও যেতে ইচ্ছে করেনি।
এরমধ্যে বড়আপার বড়ছেলে ডিটো,শীতলের মুখে জেনেছে আমি ঢাকায় একাকী ঈদ করছি,সঙ্গে সঙ্গে এত্ত খাবার নিয়ে এসে হাজির।
অপর এক পরম আত্মীয়া গতকাল রাত ৯টার দিকে চমতকার এক শাড়ি উপঢৌকন দিয়ে গেছে।দুপুরে ডেকে নিয়ে সে পাশে বসিয়ে খাওয়ালো।
উত্তরা থেকে কবির ভাতিজা ও ভাতিজি দুজনেই ফোন করে খোঁজ নিয়ে জানালো—তারাও আসবে একবার।
কথায় বলে, “নাইয়ার এক নাও( নৌকা অর্থে) নিনাইয়ার( যার কেউ পাশে নেই) শতেক নাও”।
সেই সুবিধাটি আল্লাহর পাইয়ে দিলো মনে হয়।
এই খুশির দিনটিতেও মহান প্রভু আমাকে অখুশি রাখেনি—আরো একবার তার প্রমান পেলাম।
মানুষের ভালোবাসা পাওয়া এবং দেয়ার চেয়ে বড় কোনো ধর্ম নেই।
এজন্যে বলা নিরর্থক নয় যে “ধর্ম যার যার—উৎসব সকলের”।
৩১/৩/২৫